ধরনভেদে বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলে সবজি সংগ্রহ করতে হয়। কিছু বিষয় খেয়াল রেখে সঠিক নিয়মে কোমল ও সতেজ অবস্থায় সংগ্রহ করে বাজারজাত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সবজি দেরিতে সংগ্রহ করলে গুণগত মান নষ্ট হয়। আবার বেশি কচি অবস্থায় সংগ্রহ করলে ফলন অনেকাংশে কমে যায়। তাই সবজি তখনই সংগ্রহ করতে হবে; যখন এটি খাওয়ার উপযুক্ত হবে এবং বেশিদিন সংরক্ষণ করা যাবে।
সবজি সংগ্রহের সময় যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
১. হাত দিয়ে মোচড়ে সবজি সংগ্রহ করা যাবে না। এতে মাতৃগাছের ক্ষতি হয়। মোচড়ানোর ফলে গাছে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, সেখান দিয়ে রোগ-জীবাণুর আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. গাছের ক্ষতি এড়ানোর জন্য ধারালো ছুরি বা ক্লিপার দিয়ে সংগ্রহ করতে হবে। সংগ্রহ করে সবজি তোলার পাত্রে রাখতে হবে।
৩. মাঠে থাকা অবস্থায় সবজির গায়ে ধুলাবালি লাগতে পারে। তাই সংগ্রহের পর পরই পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিলে আকর্ষণ বাড়ে এবং নেতিয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমে। তবে অপরিষ্কার পানিতে ধোয়া উচিত নয়। তাতে রোগ-জীবাণুর আক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।
৪. কাছের বা দূরের বাজারে পাঠানোর আগে আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য ছাঁটাই করতে হবে। খুব ধারালো ছুরি দিয়ে ছাঁটাই করতে হবে।
৫. আকর্ষণ এবং মূল্য বাড়ানোর প্রয়োজনে সটিং এবং গ্রেডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সবজিভেদে আকার-আকৃতি, বর্ণ, বাত্তি, পরিপক্বতা অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে গ্রেড প্রচলন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. যেহেতু রসালো সবজি সংগ্রহ করার পরও শ্বসন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। সে জন্য ঠান্ডা ঘরে বায়ুশূন্য করে অল্প সময়ের জন্য হলেও মাঠের তাপ সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. দূরে পাঠাতে বা অনেকক্ষণ সবজি টাটকা রাখতে মোড়কায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সবজি সংগ্রহের পর পরই খুব কম সময়ের মধ্যে পানি ছেড়ে দেয় এবং নেতিয়ে পড়ে। তাই এগুলো খুব পাতলা ও স্বচ্ছ পলিথিনে রাখলে নেতিয়ে পড়া কমে। শাক, ব্রোকলি, শিম, লেটুস, ধনিয়াপাতাকে মোড়কায়ন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. মোড়কায়নের পর দূরে পরিবহনের সময় সবজিতে যেন আঘাত না লাগে। সেজন্য বস্তাবন্দি না করে বায়ু চলাচলের সুবিধাযুক্ত প্ল্যাস্টিক, কাঠ, বাঁশের খাঁচা অথবা কার্ড বোর্ডের বাক্সে সবজি চালান দেওয়া উচিত।
৯. মনে রাখতে হবে, পরিবহনের সময় ট্রাকের ও ট্রেনের বগিতে পরিচ্ছন্নতা ও বাতাস চলাচলের বিশেষ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।