রোববার (১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ২১১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৭ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে; (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে)। একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুলাইয়ে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে।
চলতি বছরের অক্টোবরে পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। গত বছর অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রেমিট্যান্স এসেছে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল ৬১৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এদিকে ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে এবং এ বছর প্রবাসী আয় আহরণে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক। গত ২৯ অক্টোবর প্রকাশিত ওয়াশিংটনভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় সংস্থার ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস থ্রু এ মাইগ্রেশন লেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
বিশ্বব্যাংকের ধারণা অনুযায়ী, মহামারির প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছর বাংলাদেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরও ৮ শতাংশ বাড়বে। বাংলাদেশে চলতি বছর রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রেমিট্যান্সপ্রবাহ চাঙা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর শেষে দেশে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (পরিমাণ প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সে হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।