প্রকাশ্যে না হলেও ওয়াশিংটনের পরিস্থিতি নিয়ে চাপা উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ডেমোক্র্যাটরা যেমন কোনো কিছু নিয়েই নিশ্চিত হতে পারছেন না, তেমনি ট্রাম্প–সমর্থকেরা বিমর্ষ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা ক্ষমতা গ্রহণের পালাবদল মসৃণই হবে! পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য তিনি কৌতুক করে বলেছেন কি না, তা টের পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নানামুখী সংবাদ পরিবেশন করেছে।
জো বাইডেন ডেলোয়ারা রাজ্যে তাঁর বাড়িতেই আছেন। সেখানেই গতকাল এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর বক্তব্য নিয়ে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। বাইডেন বলেছেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজকর্ম এগিয়ে চলছে।’
রিপাবলিকানরা পরাজয় মেনে নিচ্ছেন না, এমন বিষয় বাইডেনকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেছেন, ‘তারা মানবে, অবশ্যই মানবে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়া বহির্বিশ্বে ভুল বার্তা দেবে। নানা দেশের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা এমন করলে তখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পরাজিত লোকজনকে জনরায় মেনে নেওয়ার কথা বলে। এসব এখন কি হাস্যকর মনে হচ্ছে না—একজন সাংবাদিক মাইক পম্পেওকে এমন প্রশ্নও করেন। জবাবে পম্পেও বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করতে চায়, সব ভোট যেন গণনা করা হয়। যেমন করে আমেরিকায়ও এমনটি করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে জো বাইডেন বলেছেন, আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এর মধ্যেই তাঁর ফলপ্রসূ সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কথা বলেছেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডা ও আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে। বাইডেন জানান, তিনি রাষ্ট্রনেতাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আবার ফিরে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র আর একা নয় উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, তিনি নিশ্চিত, যুক্তরাষ্ট্রকে আবার আগের মতো বিশ্বের শ্রদ্ধার জায়গায় ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হবেন।
এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের মামলাসংক্রান্ত কোনো বিষয়ের কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। রিপাবলিকানদের প্রকাশ্য অবস্থান ট্রাম্পের পক্ষে থাকলেও ভেতরে-ভেতরে তাঁদের উদ্বেগ টের পাওয়া যাচ্ছে। কেউ তেমন উৎফুল্লের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে কিছু বলছেন না। আবার ট্রাম্পের সঙ্গে নিজেদের বিচ্ছিন্নও করছেন না। জো বাইডেনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বব ব্যাউয়ার বলেছেন, ট্রাম্পের আইনগত পদক্ষেপগুলো কিছু আওয়াজ দেওয়ার জন্য এবং নাটক করার জন্য।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজয় মেনে নেওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ লোকজনকেই উদ্যোগ নিতে হবে। এ কারণেই ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কা, জামাতা জ্যারেড কুশনার, ফার্স্ট লেডি মেলেনিয়া ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডৌসের নাম বারবার উচ্চারিত হচ্ছে।
অর্থসংবাদ/ এমএস