তৃতীয় প্রান্তিকের ইনভেস্টরস মিট-এ প্রকাশিত হলো আইপিডিসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। সেশনটিতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংবাদকর্মী, দেশ-বিদেশের ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টগণ, স্টেকহোল্ডারগণ। আইপিডিসি-র অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজ থেকে সেশনটি সম্প্রচার করা হয়।
আইপিডিসি-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এই সেশনে তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থার জন্য কোম্পানির ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কেও অবগত করা হয়।
অনুষ্ঠানে মমিনুল ইসলাম ও স্বল্প আয়ের মানুষজনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন যারা এই কঠিন সময়েও টেকসই প্রবৃদ্ধি ও মুনাফার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
গ্রাহকবান্ধব দারুণ সব ডিপোজিট ক্যাম্পেইনের ফলে ২০২০ সালে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝে আইপিডিসি-র কাস্টমার ডিপোজিটের পরিমাণ ২০.৫% বেড়েছে। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২৯.১% এবং খেলাপী ঋণের হার মাত্র ১.৫৯% যা কিনা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
কোভিড-১৯ সংকটের মাঝেও চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির পারফরম্যান্স ২০১৯ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে গেছে। ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আইপিডিসি ১৭.৫০% হারে সুদৃঢ় মূলধন পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করেছে। অনিশ্চিত সংকটকে বিবেচনা করে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রভিশন রেখেও প্রতিষ্ঠানটির ট্যাক্স পরবর্তী নীট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০.৩ কোটি টাকা যা বিগত বছরের একই সময়কাল থেকে ১৩.৪% বেশি। কোম্পানিটি এ বছর তৃতীয় প্রান্তিকে এসে ৮২৫.৯ কোটি টাকার তারল্য সক্ষমতা নিশ্চিত করেছে যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ এবং স্বল্পমেয়াদী দায় পরিশোধের জন্য যথেষ্ট।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মমিনুল ইসলাম অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে মাথায় রেখে গ্রাহকদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। বিশেষত কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী অর্থনীতির সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র ক্ষুদ্র, মাঝারি, কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের সাহায্য করতে আইপিডিসি ‘এসএমই বন্ধু’-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭০ কোটি টাকা প্রণোদনা অর্থ বিতরণে সহায়তা করছে। ইউনিলিভার, রবি, আড়ং-এর মতো প্রতিশ্রতিশীল প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে যুক্ত হয়ে আইপিডিসি গ্রাহকদের সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
আইপিডিসি চলমান মহামারি সংকটে নিজেদের কর্মীদের কল্যাণে এসময় বেশ কিছু প্রচেষ্টা নিয়েছে যার মধ্যে কর্মীদেরকে বিনামূল্যে কোভিড টেস্ট করানো অন্যতম। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের কার্যক্রম ডিজিটাল-এ রুপান্তরের মধ্যে দিয়ে কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ঘরে বসেই কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। কর্মীদের অনুপ্রেরণা যোগাতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে ‘স্টে হোম স্টে সেফ’ ক্যাম্পেইন করেছে আইপিডিসি।
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সামাজিক সংকট মোকাবেলায় আইপিডিসি ‘মানবতা ডিপোজিট’ নামে একটি বিশেষ ডিপোজিট পণ্য প্রবর্তন করে যার অংশ হিসেবে আইপিডিসি বঞ্চিতদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করে। আইপিডিসি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেছে। এছাড়া সংকট মোকাবেলায় ‘অকশন ফর অ্যাকশন’, চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল উদ্যোগে আইপিডিসি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অনুদান সহায়তা দিয়েছে।
ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইন শো ‘অগ্রজ’-এর মাধ্যমে আইপিডিসি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্নক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বর্ষীয়ান গুণী ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ করছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আইপিডিসি বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও আদর্শভিত্তিক কুইজ অ্যাপ ‘বঙ্গবন্ধু গ্র্যান্ডমাস্টার’ শুরু করেছে যা তরুণদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখছে। কুইজের প্রত্যেকটি ধাপে প্রতিযোগীরা কুইজের মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবনের ঐতিহাসিক সব তথ্য সম্পর্কে জানতে পারছে।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত ইনভেস্টরস মিট-এর লাইভ সেশনে আইপিডিসি-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, “সংকটের মধ্যেও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বাংলাদেশের অর্জন সারা বিশ্বে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। তেমনি অর্থনৈতিক সহযোগী হিসেবে আইপিডিসিও অনিশ্চয়তা মোকাবেলা করে তার পথচলায় এই মুহুর্তে সর্বোচ্চ তারল্য সক্ষমতা অর্জন করেছে যা সম্ভব হয়েছে মূলত সময়োপযোগী পরিকল্পনা, কর্পোরেট সুশাসন এবং গ্রাহক, কর্মী ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গির জন্যে।
অর্থসংবাদ/এ এইচ আর