করোনা মহামারীর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতের মান্দির পাইকারি বাজারে রফতানিযোগ্য তুলার দাম ছিল কুইন্টালপ্রতি ৫ হাজার রুপির (ভারতীয় মুদ্রা) আশপাশে। তবে করোনা মহামারী চলতি বছর ভারতীয় তুলার বাজারে বিদ্যমান পরিস্থিতি বদলে দেয়। এপ্রিল নাগাদ দেশটির বাজারে প্রতি কুইন্টাল তুলার দাম ৪ হাজার ২৫০ রুপিতে নেমে আসে।
বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে তুলার বাজার। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ক্রমশ বাড়তে থাকায় তুলার মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এ ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের অক্টোবর নাগাদ ভারতের পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল তুলার দাম ফের ৫ হাজার ৩০০ রুপিতে উন্নীত হয়। ভারতে করোনা সংক্রমণ না কমলেও বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে লকডাউন শীথিল করায় রফতানিতে গতি ফিরতে শুরু করে। এটাই দেশটির বাজারে তুলার মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
বর্তমানে মান্দির পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল তুলার দাম ৫ হাজার ৭৯০ রুপির আশপাশে অবস্থান করছে। যদিও ভারতে তুলার ন্যূনতম সহায়তা মূল্য (এমএসপি) কুইন্টালপ্রতি ৫ হাজার ৮২৫ রুপি। বর্তমান প্রবণতা অপরিবর্তিত থাকলে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ভারতের পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল তুলার সর্বোচ্চ দাম ৫ হাজার ৮৭৫ রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে গুজরাটের জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএইউ) কৃষি-অর্থনীতি বিভাগ।
ভারতের বাজারে তুলার সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধির পেছনে পণ্যটির উৎপাদন সীমিত হয়ে আসা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। দেশটির সরকারি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০-২১ মৌসুমে ভারতে সব মিলিয়ে ১২৯ দশমিক ৫৭ লাখ হেক্টর জমিতে তুলা আবাদ হতে পারে। পণ্যটির উৎপাদন দাঁড়াতে পারে সাকল্যে ৩৭১ লাখ বেলে। গত অক্টোবরের পর থেকে গুজরাটসহ আশপাশে রাজ্যগুলোয় বৃষ্টি বেশি হয়েছে। এতে তুলার আবাদ ও উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে পণ্যটির দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে এটাও প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদনকারী দেশ ভারত। মন্দা ভাব কাটিয়ে গত বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৫ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) তুলা উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস। এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন বেড়েছে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এসএ/১৫:৩৬/১১:২২:২০২০