সোমবার ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
বিজনেস ইনসাইডার জানায়, সম্প্রতি চীন তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এরপর থেকেই স্পটলাইটে আছেন জ্যাক মা। ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা দেশটির বৃহত্তম ই-কমার্স কোম্পানি আলীবাবার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যে প্রতিষ্ঠানকে কেউ কেউ ‘চীনের অ্যামাজন’ বলে অভিহিত করে থাকেন। এছাড়াও, নভেম্বরে চীন বেশ কিছু নতুন নিয়ম চালু করেছে।
এর আগে, অক্টোবরে সাংহাইতে এক সম্মেলনে চীনের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমালোচনা করেন জ্যাক মা। এর কয়েক সপ্তাহ পরে ওই নতুন নিয়ম চালু করে চীন। সম্মেলনে তিনি চীনের ব্যবহৃত বৈশ্বিক আর্থিক নিয়মকানুনকে ‘একটি বুড়োদের ক্লাব’ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণে আমরা গতকালের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি না।’
ডেবট-ফিন্যান্সিং স্টার্টআপ ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্লেয়ার সিলভারবার্গ নভেম্বরে বিজনেস ইনসাইডারকে বলেছিলেন, ‘নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে, যাতে সরকার জ্যাক মার ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।’
দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নভেম্বরে জ্যাক মা তার প্রতিষ্ঠিত আফ্রিকান ট্যালেন্ট শো ‘আফ্রিকার বিজনেস হিরো’-এর বিচারক পদে জায়গা পেয়েছিলেন। বিষয়টি জানতে বিজনেস ইনসাইডার ট্যালেন্ট শো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু, আলীবাবার একজন মুখপাত্র বিজনেস ইনসাইডারকে বলেছেন, জ্যাক মা ওই অনুষ্ঠানের ফাইনালে বিচারক প্যানেলে থাকতে পারবেন না। যা নভেম্বরে ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু ‘সময়সূচির দ্বন্দ্বের কারণে’ এখনো মুক্তি পায়নি।
জ্যাক মার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, ‘এর বাইরে আমাদের আর কিছু বলার নেই।’
জ্যাক মা ২০১৯ সালে আলীবাবার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত জ্যাক মা চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন এবং তার ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি আর্থিক সম্পদ ছিল। তবে, চীন আর্থিক প্রযুক্তি শিল্পের জন্য কঠোর নিয়ম করায় গত দুই মাসে জ্যাক মার ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ারস ইনডেক্স অনুসারে, আজ জ্যাক মার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৫০.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চীনা ধনকুবেরদের মধ্যে চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছেন।
জ্যাক মার সন্দেহজনক ‘নিখোজ’ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তাকে নিয়ে আরেক চীনা কোটিপতি ব্যবসায়ীর করা ভবিষ্যদ্বাণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত সপ্তাহে, চীন সরকার দেশটির বৃহত্তম ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম আলীপে-এর মালিক অ্যান্ট গ্রুপের কর্পোরেট কার্যক্রম ‘সঠিক নয়’ বলে দাবি করে। পরে সরকার তাদের কার্যক্রম পিছিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এ বিষয়ে অ্যান্ট গ্রুপের একজন মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে বিজনেস ইনসাইডারকে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাননি তিনি।