বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে শিল্প ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ। কিন্তু এ খাতের খেলাপি ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্টরা বলেন, একটি বড় ঋণ খেলাপি হলে তার প্রভাব অনেক বেশি। যে কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও বেশি মুনাফার সুযোগের ফলে ব্যাংকগুলো বরাবরই বড় শিল্পে ঋণ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে মোট শিল্প ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৪৪২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা ২০১৯ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৮৯ হাজার ৪২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সেই হিসেবে বছরের ব্যবধানে আদায় বেড়েছে ২৫ দশমিক ১৭ শতাংশ।এ খাতে মোট মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৫৯ হাজার ৬১৪ কোটি ৫৩ লাখ থেকে ৭১ হাজার ৩৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ২০১৯ শেষে ১৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে শিল্প ঋণের মোট বকেয়া স্থিতি ছিল ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬০৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২০১৯ শেষে ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪০৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গত বছরে (২০১৯) ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। যা মোট বিতরণের ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। তবে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
গত বছর ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ১০ বছর মেয়াদে মাত্র ৯ শতাংশ সুদে খেলাপি ঋণ কমানোর গণছাড় দেয়া হয়। ফলে ২০১৯ সালে ৫২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নবায়ন হয়েছে। এক বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ পরিমাণ পুনঃতফসিল। একারণেই কমে এসেছে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ। তবে ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৯ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। অবলোপনের মাধ্যমে খেলাপির খাতা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এদিকে অর্থঋণ আদালতে মামলায় আটকে আছে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের অঙ্ক ৪ লাখ ৬৩৭ কোটি টাকা।