রোববার (৩১ জানুয়ারি) তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) তাদের একজনকে চাকরিচ্যুত এবং অন্যজনকে ডিএসসিসি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএসসিসি জানায়, চাঁদাবাজির ঘটনায় করপোরেশনের চেইনম্যান মো. নোবেল হাসান মিঠু ও আনসার পিসি মো. শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বংশাল থানা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ধরনের অনৈতিক আচরণ এবং দাফতরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ায় চেইনম্যান মো. নোবেল হাসান মিঠুকে ডিএসসিসি হতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
একই অপরাধে আনসার পিসি মো. শহিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ড অবহিত করে তার নিয়ন্ত্রণকারী দফতরে (আনসার ও ভিডিপির জোন অধিনায়ক, ডিএমএ - দক্ষিণ) অবহিত করে পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।
করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ চেইনম্যান মিঠুকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী চাকুরী বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৬৪ (২) মোতাবেক জনস্বার্থে এবং করপোরেশনের স্বার্থ রক্ষার্থে সম্পত্তি বিভাগের চেইনম্যান মো. নোবেল হাসান মিঠুকে চাকুরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে মিঠুর অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ করে আদেশে আরও বলা হয়, তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন নগদ প্রাপ্য হবেন। তাকে এ করপোরেশনের হিসাব বিভাগের অতিসত্বর যোগাযোগ করে ৯০ দিনের বেতন বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য যে, নোবেল হাসান মিঠু গত ২ ডিসেম্বর করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান আহমেদ এর পেশকার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত ছিলেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর দিন থেকেই তার অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ ও মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ চেইনম্যান মিঠুকে একাধিকবার সতর্ক করেন। কিন্তু তার আচরণ ও ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১০ ডিসেম্বর তার কাছে থাকা মোবাইল কোর্টে সহযোগিতার সরঞ্জামাদি বিশেষত জরিমানা বই, মোবাইল কোর্টে ব্যবহৃত আইনের বই, সাজা পরোয়ানার কপি, আসামির স্বীকারোক্তি ফর্ম ইত্যাদি ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাকে মোবাইল কোর্ট বা উচ্ছেদ কাজে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সেদিন থেকে চেইনম্যান মিঠুকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দাফতরিক কার্যক্রমে হতে বিরত থাকতে বলা হয়। বিগত ৩১ জানুয়ারি রাতে বংশাল থানা হতে করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদকে অবগত করে বলা হয় যে, জাকির সুপার মার্কেটের সামনে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় লোকজন মিঠু নামের করপোরেশনের একজন চেইনম্যান ও পিসি মো. শহীদুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ বংশাল থানার ওসিকে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও চাঁদাবাজিতে সহযোগিতার জন্য মামলা করার নির্দেশ দেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বংশাল থানায় ১ ফেব্রুয়ারি পেনাল কোডের ১৭০/৪২০/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করে।
এরই ধারাবাহিকতায় চেইনম্যান মিঠুকে সোমবার করপোরেশনের চাকরি হতে অপসারণ করা হয়েছে এবং আনসারের পিসির সার্বিক কর্মকাণ্ড তার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর জন্য নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।