করোনার বিস্তার রুখতে ব্যর্থ হওয়া ও চীনের প্রতি ‘আনুগত্য’ পালনের অভিযোগ তুলে গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় এবং সদস্য দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটিতে যে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছিল, তা-ও বাতিল করা হয়। গত জুলাইয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে করা আবেদনে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের ৬ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যেতে আগ্রহী।
ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র বছরে দেয় ৪৫ কোটি ডলার, সেখানে বছরে ৪ কোটি ডলার প্রদান করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে কর্তৃত্ব করছে চীন।
গত অক্টোবরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব টেড্রোস আধানোম গেব্রেইসুস আশা প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে। তিনি বলছিলেন, এখানে অর্থই সবকিছু নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংস্থাটির সম্পর্ক ও নেতৃত্বের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র্যাট সরকার পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ক্ষমতায় এসেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে এবং বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ২০ কোটি পরিশোধ করার ঘোষণা দিলেন।
এক ভিডিও কনফারেন্সে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ব্লিনকেন বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশ হিসেবে যে আর্থিক বাধ্যবাধকতা থাকে তা পূরণের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ এটি এবং এর মাধ্যমে সংস্থাটির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি, যা কিনা মহামারীর এ সময় বৈশ্বিক কোনো সংস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন হিসেবে পরিগণিত হবে।
করোনাভাইরাস ও এর টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী নানা গুজব ও ভুল তথ্য চাউর হয়, এ নিয়ে সহযোগী দেশগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে ব্লিনকেন বলেন, মহামারীর উৎস নিয়ে চলমান বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান এবং এ নিয়ে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে তার যেন সম্পূর্ণরূপে বিজ্ঞানভিত্তিক, তথ্যবহুল ও প্রভাবমুক্ত হয়। এ মহামারীকে আরো ভালোভাবে অনুধাবন করতে এবং পরবর্তী কোনো মহামারীর জন্য সঠিক প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে সব দেশ যেন মহামারীর শুরুর দিকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো প্রকাশ করে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ১১ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে, আর মারা গেছেন ২৪ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে ২ কোটি ৭৭ লাখ সংক্রমিত আর মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি আমেরিকানের।সূত্র সিএনবিসি।