বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে হঠাৎ দায়িত্বের পরিবর্তন

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে হঠাৎ দায়িত্বের পরিবর্তন
এক মাসের মাথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদকে নতুন করে এই বিভাগে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও আইপিএফএফ-২ মোট দুটি বিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। ওই বিভাগ ছাড়া প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। এর আগে আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ, সচিব বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-১ ও ২-এ মহাব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন।

অন্যদিকে নির্বাহী পরিচালক হুমায়ূন কবিরের দায়িত্বে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা নীতি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ গৃহায়ণ তহবিল ও পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট।

তবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ ইডি শাহ আলমকে সরিয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল নির্বাহী পরিচালকদের জ্যেষ্ঠতা তালিকার প্রথম ব্যক্তি হুমায়ুন কবিরকে। হঠাৎ এই পরিবর্তনে বিস্মিত খোদ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারাও।

দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ইডি শাহ আলমের দায়িত্বে রয়েছে স্পেশাল স্টাডিজ সেল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পরও কেন তার বিরুদ্ধে শক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, সে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ব্যাংকাররা জানান, একজনের অপরাধে পুরো কেন্দ্রীয় ব্যাংক কলঙ্কিত হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে অন্যান্য বিভাগের দায়িত্ব দেয়া ঠিক হয়নি। তাকে অপসারণ করা উচিত ছিল। কোনো শক্ত পদক্ষেপ না নেয়ায় গভর্নরের মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের ‘মাসোয়ারা’ দেয়া হতো। এসব অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক এবং বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদেরও ‘মাসোয়ারা’ হিসেবে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দেয়া হতো।

৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক। এরপরই শাহ আলমকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। যারা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখে তিন মাস পর প্রতিবেদন জমা দেবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মোট ৬৬ হাজার ২১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১০ হাজার ২৪৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২০১৯ সালের একই সময়ে খেলাপির হার ছিল ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এতে হিসাব করে দেখা গেছে, আগের (২০১৯) বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে খেলাপির হার বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, লাল তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিআইএফসি, এফএএস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং ও প্রাইম ফাইন্যান্স অন্যতম। তবে এই খাতে সবই খারাপ নয়। আইডিএলসি, আইপিডিসি, আইআইডিএফসি, ইসলামিক ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের মতো বেশ কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে।

 

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা