সোমবার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশসহ মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে। অনতিবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
দেশে বর্তমানে ৩৪টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে পিপলস লিজিং অবসায়নের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একজন অবসায়ক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে অবসায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে পিপলস লিজিং। এনবিএফআইর মধ্যে ২৩টি দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, পিপলসও সে তালিকায় রয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের জন্য এনবিএফআইগুলোর লভ্যাংশ দেয়ার হার বেঁধে দেয়। এতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। এর প্রভাব পড়ে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরে, যা নিয়ে আলোচনা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো এনবিএফআইগুলোর লভ্যাংশ বণ্টন সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিশেষ অনুমতি (বাকিতে সংরক্ষণ) নেয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগকারীদের নগদে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না। কিন্তু বিশেষ বিবেচনায় সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হবে। আবার যাদের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি তারা পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না।
এছাড়া যাদের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের পরিমাণ ১০ শতাংশের চেয়ে কম কিন্তু খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি-তারাও এ তালিকায় থাকবে। এর বাইরে অর্থাৎ সন্তোষজনক অবস্থায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, নীতিমালায় নগদ লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়ে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু বোনাস শেয়ার দেয়ার বিষয়ে কোনো কথা উল্লেখ ছিল না, যা নিয়ে কিছুটা বিতর্কের জন্ম হয়। কারণ হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেন, শুধু লভ্যাংশ দেয়ার কথাটি উল্লেখ থাকলে এ সমস্যা হতো না। কারণ লভ্যাংশ দুইভাবে দেয়া যায়- নগদ ও বোনাস শেয়ারের মাধ্যমে।
এখানে নগদ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। কিন্তু বোনাসের বিষয়টি (দেয়া যাবে কি না) উল্লেখ ছিল না। যেটি ব্যাংকের লভ্যাংশ বিতরণের নীতিমালায় বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয়া ছিল। এবার বাংলাদেশ ব্যাংক বোনাস ও নগদে লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে দিয়েছে নতুন নির্দেশনায়।