পানি পানের উপকারিতা অনেক কিন্তু এটি খুব বেশি একসময় পান করলে সমস্যাও হতে পারে। ডায়েটিশিয়ান থেকে ডাক্তার প্রত্যেকেই সুস্থ থাকতে বা ওজন কমাতে পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দেন। তবে পানি যদি ঠিকঠাক নিয়ম মেনে না পান করেন তাহলে গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি খাওয়া উচিত। খুব গরম হলে আধা লিটার বাড়ানো যেতে পারে। তবে তা একসঙ্গে নয়। গোটা দিনে সময়মত অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত। একসঙ্গে অতিরিক্ত পানি পান করলে লিভারে চাপ পড়তে পারে। এতে পরবর্তীকালে লিভার খারাপ বা পেটের অসুখ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করলে হাইপোনাট্রেমিয়ার শিকার হতে পারেন আপনি অর্থাৎ শরীর থেকে কমে যাবে সোডিয়ামের পরিমাণ। যার ফলে গা গোলানো, বমি বমি ভাব, মাথা ধরা, শ্বাস কষ্ট, পেশিতে টান, দুর্বলতা দেখা দেবে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করলে একটা সময়ের পর সবসময়ের জন্য পেট ফুলে থাকবে আপনার। এজন্য যখনই তেষ্টা পাবে তখনই প্রয়োজনমতো পানি পান করুন।
কিডনিতে সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া প্রয়োজনের বেশি পানি পান করবেন না। কারণ শরীরের ভিতরের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব কিডনির, কিডনি অনাবশ্যক ক্ষতিকারক পদার্থসমূহ শরীর থেকে দূর করার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিডনি যদি সেই কাজ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে শরীরের ভিতর জমা হতে থাকবে দূষিত পদার্থ। তাই কিডনির অবস্থা বুঝেই পানি পান করা উচিত।
অনেকেই পানি ছাড়া খাবার খেতে পারেন না। কিন্তু জানেন কি, খেতে খেতে পানি খাওয়ার অভ্যাস ক্ষতিকারক। উৎসেচকের ঘনত্ব কমে যায়, যার ফলে হজমে সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে পরিমাণমত পানি পান করুন। যার ফলে আপনার পেট ভরা থাকবে, কম খাবার খেলেই পেট ভরে যাবে। এতে হজম ভালো হবে।
সারাদিনে কাজের ধরন অনুযায়ী পানি পান করা উচিত। কেউ যদি খুব কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন তাহলে গরমে ঘামের পরিমাণও অধিক হবে। সেক্ষেত্রে পানির পরিমাণ তিন বোতল থেকে আরেক বোতল বাড়ানোই যায়। যারা অফিস করেন এবং সারা দিনই কাটে এসির ঘেরাটোপে তাদের ক্ষেত্রে ৮ গ্লাস পানি পানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ এসি শরীরের আদ্রতা টেনে নেয়।
রোগা হওয়ার জন্য অন্যতম অস্ত্র পানি পান। কারণ ফ্যাট জাতীয় যৌগ ঘাম এবং প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। রোগা হতে চাইলে নিয়ম করে পানি পান করুন।