আজ বেলা ২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পযন্ত দেশের প্রধান পূঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে শেয়ারবাজারে ধস নামার কোনো কারণ নেই। বিনিয়োগকারীরা হুজুগে মাতাল হয়ে লেনদেনে অংশ নেওয়ায় বাজারে এমন পতন হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে।’
‘কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দেশে কি পরিমান ক্ষতি হবে বা অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব পড়বে তা তারা জানে না। না জেনেই একটি কুচক্রি মহলের প্রচারণায় কান দিয়ে শেয়ার বিক্রির হিড়িক ফেলেছে। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।’
জানা যায়, একটি কুচক্রিমহল গুজব ছড়িয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে এবং দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা শেয়ার বিক্রি করে চলে যাবে। তখন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে পতন হবে। আর এই গুজবে কান নিয়ে কিছু বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লেগেছে এবং বাজারে পতন হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা অর্থসংবাদকে জানান, ‘করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শেয়ারবাজারে যে অবস্থা চলছে তা খুবই ন্যাক্কারজনক। আমাদের বাজার সম্পর্কে ভালো ধারনা নেই অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর। তাই বিভিন্ন মহলের কথা শুনে শেয়ার কিনছে এবং বিক্রি করছে। এতে বাজারের যে স্বাভাবিক গতি থাকার কথা তা থাকছে না। বাজার খুব অস্বাভাবিক গতিতে উঠা-নামা করছে।’
‘তবে বিনিয়োগকারীদের উচিত গুজবে কান না দিয়ে প্রকৃত অবস্থা জেনে শেয়ার কেনা ও বিক্রি করা। আর অরেকটি বিষয় বিনিয়োগকারীদের মাথায় থাকা দরকার তা হলো, বাজারে পতন হওয়ার সময় কেন শেয়ার বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগতে হবে? বাজারে যখন পতন চলছে, তখন বরং কেনা উচিত। তাই বিনিয়োগকারীদের প্রতি অনুরোধ, গুজবে কান না দিয়ে বাজারের বর্তমান অবস্থা বিচার করে শেয়ার কিনবেন এবং বিক্রি করবেন।
গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় বলেছেন, ‘ইউরোপীয় নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ ৩০ দিন বন্ধ থাকবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই পতন শুরু হয়েছে বৈশ্বিক বিমান চলাচলকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি দরপতন হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কান্তাস এয়ারওয়েজের। এ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ৯.৯০ শতাংশ কমেছে ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই। এ ছাড়া জাপানের এএনএ হোল্ডিংস ও জাপান এয়ারলাইন্সের শেয়ার দর কমেছে যথাক্রমে ৫.৬৩ শতাংশ ও ৭.০৩ শতাংশ। কোরিয়ার এয়ারের শেয়ার দর কমেছে ৪.৬২ শতাংশ।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৩শ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪ হাজার ৬৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে করোনার পরিস্থিত সব দেশে এক রকম নয়। সাধারণত শীত প্রধান দেশগুলোতে করোনার আঘাত একটু বেশি। আর গ্রীষ্ম প্রধান দেশগুলোতে করোনার প্রভাব খুব বেশি নয়।