ফেব্রুয়ারি ১ তারিখে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় জানানো হলো।
সরকারের মন্ত্রণালয় ও ব্যাঙ্কগুলো শিগগিরই পুরোপুরিভাবে আবার কার্যক্রম চালু করবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল তুন দাবি করেন, তাদের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ক্ষীণ হয়ে এসেছে কারণ মানুষ শান্তি চায়।
তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভ কমে আসার কারণ হলো শান্তি চায় এমন মানুষেরা সহযোগিতা করছেন। কারণ এটি মূল্যবান।’ তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে আমরা জনগণের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
তিনি বলেন, বিক্ষোভে ২৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিক্ষোভ দমনে অটোমেটিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেন জেনারেল তুন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না বলে যে প্রতিবেদন এসেছে, সেগুলোকে ‘ভুয়া খবর’ বলে দাবি করেন তুন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করছি ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করছি।’
এদিকে মিয়ানমারে নিয়োজিত বিশ্বের ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘যারা একটি অবাধ, ন্যায়বিচারের, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক মিয়ানমারে বিশ্বাসী তাদের সকলের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থনের জন্য আমরা একসাথে দাঁড়িয়েছি। সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের প্রসঙ্গে বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘তাদের সাহস ও আত্মমর্যাদা দেখে আমরা অভিভূত।’
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা স্বাক্ষর করেছেন।
মিয়ানমারে শুক্রবারও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। ইয়াঙ্গুনের কাছাকাছি বাগো শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চারজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন।
দ্য অ্যাসিসট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ৬১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৮টি শিশুও রয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৮শ এর বেশি মানুষ আটকাবস্থায় রয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স।