এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে বলে হাসপাতালটির একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) ওই হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. ডি কে বালুজা এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছ থেকে ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন অক্সিজেন বরাদ্দ পেয়েছি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ তা আমাদের কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু এই অক্সিজেন এসেছে মধ্যরাতের দিকে। সে সময় পর্যন্ত ২৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।’
এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত ২১৫ জন কোভিড রোগীর অবস্থা গুরুতর এবং তাঁদের অক্সিজেনের খুব প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে দিল্লি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের আবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের হাসপাতালে আগামী কয়েক মিনিটের মধ্যে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটতে চলেছে। আমরা এরই মধ্যে ২৫ জনকে হারিয়েছি। অক্সিজেনের জন্য আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমাদের চিকিৎসকেরা আপনাদের সামনে আছেন। দয়া করে জীবন বাঁচান।’
এই হাসপাতালের আগে দিল্লির মুলচাঁদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সরবরাহের আবেদন জানায়। এক টুইটে তারা এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও লে. গভর্নর অনিল বাইজালের সহায়তা চায়। সেখানে ১৩০ জনের বেশি কোভিড রোগী লাইফ সাপোর্টে থাকার কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ওই টুইটের ঘণ্টাখানেক পরে হাসপাতালটির মেডিকেল ডিরেক্টর মধু হান্দা বলেন, ওই সময় হাসপাতালে অক্সিজেনের অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে মাত্র ৩০ মিনিটের মতো চলতে পারে। সে কারণে তাঁরা ভেঙে পড়েছিলেন। পরে কর্মকর্তারা সাড়া দিয়েছেন। তাঁর ধারণা, আরও অনেক হাসপাতাল এই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
ভারতে দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণ খুব বেশি বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। তিন দিন ধরে বেশ কয়েকটি হাসপাতালের পক্ষ থেকে অক্সিজেন সরবরাহের পাশাপাশি শয্যা ও ওষুধের সংকটে পড়ার কথা জানানো হয়েছে। অনেকগুলো হাসপাতাল এ বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
আদালত হাসপাতালে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ‘ভিক্ষা, ধার বা চুরি করে হলেও’ কেন্দ্রীয় সরকারকে এই নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করতে বলেছেন বিচারকেরা।