ইওয়াই আইটেম ক্লাবের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাওয়ার্ড আর্চার বলেছেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশাতীত সক্ষমতা দেখিয়েছে। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, টিকাদান কর্মসূচি এবং বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে।
গত বছরটা ছিল যুক্তরাজ্যের জন্য বিভীষিকাময়। কোভিডের অভিঘাতে দেশটির জিডিপি সংকোচন হয় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে দুর্বল ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এবার যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৭ শতাংশে উঠবে।
সে জন্য ইওয়াই আশা করছে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রাক্–মহামারি পর্যায়ে চলে যাবে। অথচ আগের পূর্বাভাস ছিল, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে সে বছরের তৃতীয় প্রান্তিক লেগে যাবে।
সম্প্রতি রয়টার্সের এক জরিপে জানা গেছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগলেও কর্মসংস্থানে ধীরগতি থাকবে। কিন্তু আইটেম ক্লাবের অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেকারত্বের হারও কমবে যুক্তরাজ্যে। এ বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে বেকারত্বের হার দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, অথচ জানুয়ারি মাসেই পূর্বাভাস ছিল, তা দাঁড়াবে ৭ শতাংশ।
হাওয়ার্ড আর্চার আরও বলেছেন, সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতির ক্ষত যত গভীর হবে ভাবা হচ্ছিল, বাস্তবে অতটা হবে না। এ ছাড়া বছরের বাকি সময় পুনরুদ্ধারের গতি ভালোই থাকবে।
আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডেলয়েটও বলেছে, যুক্তরাজ্য প্রত্যাশাতীতভাবে দ্রুততার সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াবে। ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসে দেশটির ভোক্তাদের আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে। তিন হাজার ভোক্তার ওপর পরিচালিত ডেলয়েটের জরিপে এই তথ্য মিলেছে। ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ভোক্তা সন্তুষ্টি ১১ শতাংশে পৌঁছেছে। আরেক গবেষণায় জানা গেছে, সম্প্রতি লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করার কারণে দেশটির অর্থনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে।
নানাভাবেই বোঝা যাচ্ছে, দেশটির মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরতে শুরু করেছে। আইএইচএস মারকিটের সিআইপিএস পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) এপ্রিল মাসে ৬০-এ উঠেছে। মার্চ মাসে যা ছিল ৫৬ দশমিক ৪। এই সূচক ৫০-এর ওপরে ওঠার অর্থ হলো, সম্প্রসারণ হচ্ছে।
এ ছাড়া কোভিড শুরু হওয়ার পর এই প্রথম সেবা খাতের সম্প্রসারণ উৎপাদন খাতকে ছাড়িয়ে গেছে। মূলত এপ্রিল মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন পণ্যের দোকান খুলে যাওয়ার পর এমনটি ঘটেছে।