ভারতীয় অর্থনীতি গত নভেম্বর মাসে থেকে কেবলই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। এর মধ্যে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় তা আবার থমকে গেছে। কারখানায় উৎপাদন কমে গেছে। সেই সুযোগ চীনা পণ্যের রপ্তানি আরও বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবারের এপ্রিলে চীনের রপ্তানি বেড়েছে ৩২ শতাংশ। একই সময়ে দেশটির আমদানি গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশ।
করোনার মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধ হয়নি। এ ছাড়া সারা পৃথিবীর অর্থনীতি একরকম স্থবির। এর মধ্যেই চীনের রপ্তানি এতটা বেড়েছে। আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি হয়েছে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। তবে গত বছরের সঙ্গে এবারের তুলনা দিতে অনেক অর্থনীতিবিদই রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, গত বছর এই সময়ে বিশ্ব অর্থনীতি একরকম স্থবির হয়ে পড়েছিল। ফলে তুলনাটা ঠিক সাজে না।
অন্যান্য বড় দেশের তুলনায় চীন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অনেকটাই এগিয়ে আছে। তা সত্ত্বেও অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, দেশটির সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও নিকট ভবিষ্যতে গতি কমে যাবে। বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে পণ্য সরবরাহের গতি কমে যাবে। জাহাজীকরণের খরচ যাবে বেড়ে। এর সঙ্গে শুরু হয়েছে মাইক্রো চিপের সংকট। সে কারণে গাড়ি থেকে শুরু করে কম্পিউটারের মতো পণ্য উৎপাদন কমে গেছে।
চীনা অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে শ্লথগতির পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে। দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্সের প্রবৃদ্ধি এপ্রিল মাসে কমে গেছে। এর মধ্যে আবার বৃহস্পতিবার চীন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সংলাপ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। দুটি কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। প্রথমত, অস্ট্রেলিয়া কোভিড-১৯-এর উৎপত্তি নিয়ে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছিল। দ্বিতীয়ত, তারা হুয়াওয়েকে নিজ দেশে ফাইভ–জি প্রযুক্তির অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি দেয়নি। এ ছাড়া চীন গত বছর অস্ট্রেলীয় ওয়াইন ও গুরুর মাংসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর প্রভাব শিগগিরই অনুভূত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।