শুক্রবার (১১ জুন) কলকাতার বাইপাস এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসকদের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সমরেশ মজুমদার। শ্বাসনালীতে গভীর সংক্রমণই এই শ্বাসকষ্টের কারণ।
হাসপাতালে তার বুকের এক্সরে, সিটি স্ক্যান, রক্তপরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক টেস্টগুলো করা হচ্ছে। করোনা টেস্টও ইতোমধ্যে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
সাহিত্যিকের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ১০-১২ বছর ধরে ফুসফুসের জটিল রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে (সিওপিডি) ভুগছেন সমরেশ মজুমদার। এই মুহূর্তে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
এর আগে ২০২১ সালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন লেখক। সেই সময় ভেন্টিলেশনও রাখা হয়েছিল তাকে।
৭৯ বছর বয়সী সমরেশ মজুমদার দুই বাংলার পাঠককে দশকের পর দশক করে বিমুগ্ধ করে রেখেছেন তার লেখনিতে। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল তার প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’। সেই যাত্রা শুরু, এরপর একে একে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ-এর মতো উপন্যাস বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে পাঠক প্রিতার বিচারে তার সেরা সৃষ্টি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’- ত্রয়ী উপন্যাস।
এই তিন উপন্যাসের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘কালবেলা’। গত শতকের ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গের নকশাল আন্দোলনকে উপজীব্য করে লেখা এই উপন্যাসটির চলচ্চিত্র রূপায়নও হয়েছে।
তার লেখালেখির গণ্ডি শুধু গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। সমকালীন বাংলা ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাসের ক্ষেত্রে সমরেশ মজুমদারের সমতুল্য লেখক আধুনিক বাংলা সাহিত্যে খুব বেশি নেই।
সমরেশ মজুমদারের ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও বিপুল। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার লাভ করেছেন সমরেশ মজুমদার।