জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৭৫টি দেশ ও অঞ্চলে বিস্তৃত হয়ে ৫ লাখ ১১ হাজার ৬০৩ জনকে আক্রান্ত করেছে নভেল করোনাভাইরাস।
আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত মৃত্যু ঘটেছে ২৩ হাজার ৬৭ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৯৮৩ জন।
ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যাপক সংক্রমণে পর বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসাস গত সোমবারই দেখিয়েছিলেন, কত দ্রুতগতিতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তা লাখ ছাড়াতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। রোগীর সংখ্যা এক লাখ থেকে দুই লাখে যেতে সময় লেগেছে ১১ দিন।
এরপর চার দিনেই রোগীর সংখ্যা দুই লাখ থেকে তিন লাখে পৌঁছে যাওয়া নিয়েই উদ্বেগ দেখিয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েসাস। এখন চার দিনে রোগীর সংখ্যা চার লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে ৫ লাখও ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ প্রতি দুদিনে এক লাখ আক্রান্ত হচ্ছে।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। অন্য প্রদেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার পর ভিন্ন দেশেও ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়।
তখন এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় নভেল করোনাভাইরাস, আর এর ফলে সৃষ্ট রোগ নাম পায় কোভিড-১৯; যার লক্ষণ জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসজনিত সমস্যা।
শুরুতে চীনে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকলেও মাস দুয়েকের মধ্যে তারা পরিস্থিতি অনেকটাই সামলে নিয়ে ফেলে।
চীনের পর প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়া এবং এরপর ইতালিতে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। কোরিয়া পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারলেও ইউরোপ বিপর্যস্ত হওয়ার পর এখন পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে ছাড়াতে না পারলেও মৃতের সংখ্যায় ছাড়িয়ে যাওয়া ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১২ জনের মৃত্যু ঘটেছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৫০ জন বেশি।
এনিয়ে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ হাজার ১৬৫ জনে। সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৫৩৯ জন।
স্পেনেও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে ইতালির মতোই। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৬৫৫ জনের মৃত্যু নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৪৫ জনে। স্পেনের আক্রান্ত ৫৬ হাজার ১৯৭ জন।
যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এখন স্পেনকে ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে ৭৫ হাজার ২৩৩ জন কোভিড রোগী ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ১ হাজার ৯৩ জন।
যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে, এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৭৭ জনের।
আক্রান্তের সংখ্যায় চীন এখনও শীর্ষে আছে, যদিও তাদের নতুন সংক্রমণের হার খুব কম। চীনে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৮১ হাজার ৭৮২, মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯১।
আক্রান্তের সংখ্যায় চীনের পর যথাক্রমে রয়েছে- ইতালি (৮০৫৩৯), যুক্তরাষ্ট্র (৭৫২৩৩), স্পেন (৫৬১৯৭), জার্মানি (৪৩৬৪৬), ইরান (২৯৪০৬), ফ্রান্স (২৫৬২৪), সুইজারল্যান্ড (১১৭১২), যুক্তরাজ্য (৯৯৬৩) ও দক্ষিণ কোরিয়া (৯২৪১)।
মৃতের সংখ্যায় ইতালি, চীন ও স্পেনের পরে ইরান (২২৩৪) ও ফ্রান্সেই (১৩৩১) এক হাজারের বেশি রোগী মারা গেছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী ধরা পড়েছে পাকিস্তানে ১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা পাকিস্তানের চেয়ে কম (৭১৯) হলেও মারা গেছে ১৬ জন।