ভারতের সংবাদসংস্থা এনডিটিভি অনলাইনকে বুধবার তিনি বলেন, তামিলনাড়ু রাজ্যের ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের গবেষণাবিভাগ সম্প্রতি কয়েক হাজার ডেল্টায় আক্রান্ত রোগীর তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
এন কে অরোরা বলেন, ‘ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, করোনার ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজের টিকা মানবদেহে ৬১ শতাংশ প্রতিরোধী শক্তি তৈরিতে সক্ষম। দুই ডোজ নিয়ে এটি উন্নীত হয় ৬৫ শতাংশে।’
এছড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়া, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু প্রতিরোধে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন- এই দুই টিকাই সমানভাবে কার্যকর বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
গত ১৩ মে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা টিকার দুই ডোজের মধ্যকার বিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ভারতে করোনা টিকার প্রথম ডোজ যারা নিয়েছিলেন, তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতো। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর এই সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দেওয়ার কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যের সরকারি জনস্বাস্থ্য সেবা সংস্থা পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (পিএইচই) এক গবেষণায় জানিয়েছিল, টিকার দুই ডোজের মধ্যে বিরতি বাড়ালে মানবদেহে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
পিএইচইর গবেষণা আমলে নিয়ে এবং সেসময় দেশে করোনা টিকার ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেওয়ায় টিকার দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের সরকার। তবে ভারতের গণটিকাদান কার্যক্রমের উপদেষ্টা পরিষদ ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপ অন ইমুনাইজেশন (এনটিএজিআই) সম্প্রতি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে অভিযোগ করেছে, টিকার দুই ডোজের মধ্যে বিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তাদেরকে বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি।
এনটিএজিআই-এর তিনজন সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ঘোষণার আগে এনটিএজিআই সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল টিকার দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান হবে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ। কিন্তু পরে, কোনো আলোচনা না করেই এই ব্যবধান ১২-১৬ শতাংশ করা হয়।
এই নিয়ে ভারতের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে আলোচনা-সমালোচনার সময়েই এই মন্তব্য এলো কোভিড ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান নির্বাহীর।
সূত্র: এনডিটিভি