গত ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে গিনির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেরেকোরে অঞ্চলে ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ১২ জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০১৬ সালের পর দেশটিতে ইবোলার সংক্রমণে এই প্রথম মৃত্যু ঘটে।
শনিবার জেরেকোরে অঞ্চলে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা আলফ্রেড কি-জারবো বলেন, গিনিতে আমার ইবোলার অবসানের ঘোষণা দেওয়ার সম্মান আছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেমি লামাহ বলেছেন, রাষ্ট্রপ্রধানের নামে (প্রেসিডেন্ট আলফা কনডে) আমি গিনিতে ইবোলার পুনরুত্থানের সমাপ্তির ঘোষণা দিতে চাই।
গিনি এবং গণপ্রজাতান্ত্রিক কঙ্গোতে ইবোলা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই ভাইরাসের পুনরুত্থান ঠেকানোর ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়।
এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ২০১৪-১৬ সালের প্রাদুর্ভাবের সময়ের দ্রুত এবং সমন্বিত প্রচেষ্টায় অর্জিত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে... ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ এবং সীমান্তের বাইরে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে গিনি।
এই রোগের প্রাদুর্ভাবের বিস্তার রোধে শনাক্ত হওয়ার পরপরই ফেব্রুয়ারিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে গিনি। ২০১৪-১৬ সালে ইবোলার প্রাদুর্ভাবে ১১ হাজার ৩০০ জনের প্রাণহানি ঘটে; যার বেশিরভাগই গিনি, সিয়েরালিওন এবং লাইবেরিয়ার।
ইবোলায় আক্রান্ত শিম্পাঞ্জি, বাদুড় এবং হরিণজাতীয় প্রাণীর মাধ্যমে মানুষের মাঝে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তীব্র জ্বর, বমি ইবোলার অন্যতম উপসর্গ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর অবিরাম রক্তপাত হয়। চোখ, নাক, কান এমনকি শরীরের অভ্যন্তরেও রক্তপাত হতে পারে। সংক্রমিত হলে লক্ষণ প্রকাশ পেতে দুই দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগে।
১৯৭৬ সালে মধ্য আফ্রিকার উত্তরাংশে কঙ্গোর উপত্যকায় প্রবাহিত ইবোলা নদীর তীরে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ইবোলা নদীর তীরে ভাইরাসটির উৎপত্তি হওয়ায় নদীটির নামেই ভাইরাসটির নামকরণ হয়। ইংরেজিতে রোগটির নাম দেওয়া হয় ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (ইভিডি)।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।