গৃহযুদ্ধ ও সংঘাতকবলিত দেশটির দারিদ্র্যপীড়িত এসব নারীকে কর্মমূখী প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি করা হচ্ছে, দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত বাংলাদেশের নারী সেনা সদস্যদের মাধ্যমে। এ জন্য প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তারা।
প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীরা ওয়েস্টার্ন বাহর আল গজল প্রদেশের বাসিন্দা। সরকারের লিঙ্গ, শিশু ও সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এসব নারীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তারপর তাদের একত্রিত করে দেওয়া হয়েছে সেলাইয়ের কাজের প্রশিক্ষণ।
প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নারীদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বিষয়ে। সেটি হলো দরিদ্রকবলিত এই দেশটির যেসব নারী সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও যাদের দিনযাপনের জন্য ন্যূনতম আয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।
এসব নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সেনাদের একজন বাংলাদেশি সেনা খাশিয়া মারমার বলছেন, ‘শন্তিরক্ষী হিসেবে যখন আমাকে এ এলাকায় পাঠানো হয় তখনই আমি দেখি এখানকার অনেক একাকী মা গৃহযুদ্ধে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।’
জাতিসংঘ মিশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীদের একজন ৩০ বছর বয়সী জাস্টিনা নাসের। দুই সন্তানের এই জননী বলছেন, ‘আমি চা বিক্রি করতাম। তাতে চলতো না। তারপর জাতিসংঘ মিশনের মাধ্যমে কাপড় সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাপড় কাটা, সেলাই ও ডিজাইনের প্রশিক্ষণ পাওয়ায় আমার আয় কিছুটা হলেও বাড়বে। আর এটা করে আমি আমার বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারবো। এখন আমি আর আমার স্বামী যা করতে হিমশিম খাচ্ছি।’
ওয়াউয়ের নারী সংগঠনের সদস্য অ্যাঞ্জেলিনা পলও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। তিনিও কাপড় সেলাইয়ের কাজ শিখেছেন। এখন তিনি আশাবাদী, তার মাধ্যমে সংগঠনের অন্য সদস্যরাও এসব দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগে নারী টেইলর পাওয়া ছিল বিরল। কিন্তু সময় এখন বদলেছে। আমি আপনাদের এটা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এতে আপনাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।’
এসব নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সেনাদের একজন বাংলাদেশি সেনা খাশিয়া মারমার বলছেন, ‘শন্তিরক্ষী হিসেবে যখন আমাকে এ এলাকায় পাঠানো হয় তখনই আমি দেখি এখানকার অনেক একাকী মা গৃহযুদ্ধে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এসব নারীর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কাজের সুযোগ করে দেওয়াই হবে আমাদের প্রথম দায়িত্ব। তাহলে তারা প্রত্যেকদিনের জীবিকা অর্জন করে দিনযাপন করতে পারবেন এবং সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ তৈরি হবে তাদের।’