আর্জেন্টিনা তারকা ক্লাব ক্যারিয়ারে অগণিত ট্রফি জিতলেও দেশের জার্সিতে আজকের আগে কখনো শিরোপা জিততে পারেননি। টেন্ডুলকারও একসময় ব্যক্তিগত অনেক ট্রফি জিতলেও দেশের হয়ে একটা সময় পর্যন্ত অধরাই ছিল বিশ্বকাপ।
২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হার দেখেছেন টেন্ডুলকার। ব্যাট হাতে গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েও সেবার জিততে পারেননি বিশ্বকাপ। শেষ পর্যন্ত ২০১১ বিশ্বকাপে ২৮ বছরের অপেক্ষা কাটায় ভারত। বিশ্বকাপের দেখা পান টেন্ডুলকার। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল ভারত। টেন্ডুলকারকে সেদিন মাথার ওপর তুলে সেদিন নেচেছিলেন তাঁর সতীর্থরা।
মেসির আর্জেন্টিনাও তেমনি ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেও পারেনি। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেও কাপ জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। চোখ ভরা জল নিয়ে মেসি দেখেছেন চিলির শিরোপা নিয়ে উল্লাস। টাইব্রেকার মিস করে মেসিও দুঃখে, অভিমানে অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। পরে আবার ফিরেও আসেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে।
২০১৬ সালে সেই ফিরে আসার সার্থকতা মেসি প্রমাণ করলেন আজ কোপা আমেরিকার ফাইনালে। ব্রাজিলকে তাদেরই মাটিতে ১–০ গোলে হারিয়ে শিরোপার দেখা পেয়েছেন মেসি। দেশের হয়ে তাঁর প্রথম শিরোপা, ২৮ বছর অপেক্ষার পর আর্জেন্টিনারও প্রথম শিরোপা জয়। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টেন্ডুলকারকে নিয়ে যেমন উদযাপনে মেতেছিলেন তাঁর সতীর্থরা, তেমনি মারাকানাতেও মেসিকে নিয়ে একইভাবে উদযাপন করেছেন দি মারিয়া–মার্তিনেজরা। যেন পাশাপাশি ফ্রেমে দুটি ভিন্ন সময়ের প্রায় একই দৃশ্য।
মেসির হাতে কোপা আমেরিকা শিরোপা ওঠার পর তাঁর অর্জনে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের কিংবদন্তি টেন্ডুলকার, ‘কোপা আমেরিকা জেতায় আর্জেন্টিনাকে হৃদয় নিংড়ানো শুভেচ্ছা। এটা আর্জেন্টাইনদের জন্য ঐতিহাসিক জয়, দারুণ এক ক্যারিয়ার গড়া মেসির জন্য তা সোনায় সোহাগা। এভাবেও প্রেরণা দিয়ে যেও।’
ফাইনালে হারের পর মাঠে অঝোরে কেঁদেছেন নেইমার। নেইমারের কান্না দেখে তাঁর একসময়ের বার্সেলোনা সতীর্থ মেসি সান্ত্বনা জানান তাঁকে। আসলে এমন গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে হারের যন্ত্রণাটা ভালোই জানা টেন্ডুলকারের। ব্রাজিল ও নেইমারের উদ্দেশে টেন্ডুলকার তাই আরেকটি টুইটে লিখেছেন, ‘ফাইনাল হারের জ্বালা আমি বুঝি। তবে এটা শুধুই পথের বাঁক, পথের শেষ নয়। নেইমার ও ব্রাজিল ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে।’