বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্বজুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে এবং আমরা বর্তমানে এর প্রাথমিক পর্যায়ে আছি।’
‘গত টানা ৪ সপ্তাহ ধরে বিশ্বে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই ভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টা ইতেমধ্যে ১১১ টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’
কাজের সুবিধার জন্য বিশ্বের দেশসমূহকে ৬ টি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা । আগের দিন বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছিলেন, ডব্লিউএইচওর ১ টি প্রশাসনিক অঞ্চল ব্যতীত বাকি ৫ অঞ্চলেই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
বুধবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক বুলেটিনে বলা হয়, কেবল গত সপ্তাহেই বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এবং একই সময়ে এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বে ছাড়িয়েছে ৫৫ হাজারের কোঠা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং যুক্তরাজ্যে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বজুড়ে টিকা বণ্টনে অসমতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন গেব্রিয়েসুস। বলেছিলেন, ‘টিকা বণ্টনে অসমতা এই মহামারির দুইটি চিত্র আমাদের সামনে হাজির করেছে। একটি চিত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নত দেশসমূহ তাদের উল্লেখযোগ্য জনগণকে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে এবং যাবতীয় বিধিনিষেধ শিথিল করছে।’
‘আরেক চিত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বের অনেক দেশ, যাদের কাছে পরিমাণ টিকার ডোজ নেই, সেসব দেশের জনগণের জীবন এই ভাইরাসের দয়ার ওপর নির্ভর করছে।’
তবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক জানিয়েছেন, শুধু টিকার মাধ্যমে এই তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলা করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, ডেল্টা ধরন টিকার ডোজকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ কারণে শুধু টিকার ওপর নির্ভর করে থাকলে এই তৃতীয় ঢেউকে ঠেকানো সম্ভব হবে না।’
‘এজন্য প্রয়োজন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং তার ধরাবাহিকতা বজায় রাখা। নিকট অতীতেই আমরা দেখেছি, বিশ্বের কয়েকটি দেশ এসব পদ্ধতি অনুসরণের করে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।’