ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইনকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ডা. গুলেরিয়া বলেন, ‘আমি যদ্দুর জানি, জাইডাস টিকা তাদের ট্রায়াল শেষ করেছে এবং জরুরি প্রয়োজনে ব্যাবহার বিষয়ক অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকার ট্রায়াল আগস্ট অথবা সেপ্টেম্বরে শেষ হবে; ট্রায়াল শেষ হলে অনুমোদনের কাজটিও দ্রুত হয়ে যাবে।’
‘সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, আমরা আশা করছি, চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকেই দেশের ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের টিকার আওতায় আনা শুরু করতে পারব।’
চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে শুরু হয়েছে গণটিকাদান কার্যক্রম। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে ৪২ কোটি করোনা টিকার ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৬ শতাংশকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
শুক্রবার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য দ্বিতীয় করোনা টিকা মডার্নার অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ ও চিকিৎসা বিষয়ক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ইউরোপিয়ান মেডিকেল এজেন্সি (ইএমএ)। তার আগে গত মে মাসে ইউরোপের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন দিয়েছিল ইএমএ।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে দেশের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন দিয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারতের গণটিকাদান কর্মসূচির উপদেষ্টা ডা. এন কে অরোরাও জানিয়েছিলেন, এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের করোনা টিকার আওতায় আনার কর্মসূচি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবারের সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এআইআইএমএসের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র তাদের শিশু, কিশোর-কিশোরীদের টিকাদান শুরু করেছে- এটি ভালো সংবাদ। এ ক্ষেত্রে ভারত কিছুটা দেরিতে এ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে তা ও সত্য, কিন্তু এই বিলম্বের প্রধান কারণ হলো- আমরা আমদানিকৃত টিকার ডোজের ওপর ভর দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করতে চাই না।’
‘ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা যথেষ্ট নিরাপদ ও কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে; কিন্তু ভারতের ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী বিপুল জনগোষ্ঠীর উল্লেকযোগ্য অংশকে আমদানিকৃত ডোজের মাধ্যমে টিকার আওতায় আনা সম্ভব নয়। এই কর্মসূচিকে সচল রাখতে হলে আমাদের নিজস্ব করোনা টিকা প্রয়োজন এবং এ কারণেই ভারত বায়োটেক ও জাইডাসের অনুমোদন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।’
শিশু, কিশোর-কিশোরী ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকার আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ডা. রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের দেহে স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে, ফলে করোনা তাদের তেমন কাবু করতে পারে না; কিন্তু যেহেতু এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, তাই কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সেই পরিবারের বয়স্ক সদস্যদেরও এ রোগে সংক্রমিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।’
‘আর বয়স্ক ব্যক্তিদের বেলায় এই রোগ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তা আমরা সবাই গত দেড় বছর ধরে দেখছি।’
সূত্র : এনডিটিভি