এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘গুগলে চাকরি করাটা আমার স্বপ্নের জায়গা ছিল। ভার্সিটি জীবনের শুরু থেকেই গুগলে কাজ করার জন্য অতি আগ্রহী ছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, বড় বড় টেক জায়ান্টগুলোতে ভারতীয়দের সংখ্যা বেশি। আমি চাই এসব প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিরা যেন বেশি হারে চাকরির সুযোগ পায় সে জন্য তাদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করা এবং নিজেকে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে প্রস্তুত করা।
নতুনদের উদ্দেশে সাদমান সাকিব বলেন, প্রবলেম সলভিংটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলোতে কেউ ইন্টারভিউ দিতে চাইলে প্রবলেম সলভিং স্কিলটা খুব ভালো থাকতে হবে। পরামর্শ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই বিভিন্ন প্রোগ্রাম ভিত্তিক প্রবলেম সলভিং প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা যেন অংশগ্রহণ করে। এটি দুই-তিন বছর ভালোমতো চালিয়ে যেতে পারলে যে কেউ ভালোভাবেই প্রস্তুত হয়ে যাবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, নিজেদের স্কিল যেন নষ্ট না করে। সঠিক তথ্যের সদ্ব্যবহার করতে পারলে নতুন প্রজন্ম নিঃসন্দেহে ভালো করবে। একটা সময় হয়তো গুগল আমাদের দেশে অফিস খুলবে। যখন দেখবে এখানে অনেক বেশি সুযোগ আছে তখন হয়তো অফিস খুলতে পারে।
এছাড়াও তিনি জানান, ‘এতদূর আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা পরিবারের কাছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকাও অনেক। বিভাগের ব্যাচমেট, সিনিয়র, জুনিয়র এবং সর্বোপরি শিক্ষকের সহযোগিতা অনেক বেশি পেয়েছি। সবাই সম্মিলিতভাবে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে থেকে প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ থাকে কিন্তু এ বিষয়ে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিল না। এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া, সমস্যা সমাধানের প্রতিযোগিতায় নামা এর পুরোটাই বিভাগের কৃতিত্ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব। ২০১৫ সালে ঢাবিতে ভর্তি হন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে প্রবলেম সলভিং অর্থাৎ সমস্যা সমাধানের কাজে মনোযোগী হন তিনি। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে থাকেন। এর ফলও পেয়েছেন তিনি।
সাদমানের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন নটর ডেম কলেজ থেকে। ২০১৫ সালে ঢাবির সিএসই বিভাগে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষ করেন ২০১৯ সালে। পরে যোগ দেন স্যামসাং-এ।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথমদিকে সিনিয়র অনেকের বিভিন্ন সাফল্যের গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন সাদমান। নিজের মধ্যে স্বপ্ন বুনতে থাকেন তিনি। ২০২১-এ এসে স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
তিন ভাই-বোনের মধ্যে মেজো সাদমান। বাবা সরকারি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ছিলেন। গ্রামের বাড়ি নরসিংদী হলেও তার বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। বাবার কাছ থেকে পড়াশোনার ব্যাপারে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। গণিতের প্রতি আগ্রহটা বাবার মাধ্যমেই জন্মায়। আগামী ৪ অক্টোবর তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে তার যোগদান করার কথা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে তাইওয়ানের দূতাবাস না থাকায় ভারতে গিয়ে ভিসা আনতে হবে। সে জন্য তার যোগদান করতে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে জানান তিনি। গুগলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ক্রোম ব্রাউজারে সিকিউরিটি সিস্টেমে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করবেন তিনি। সেখানে যেসব ডিভাইস ইনস্টল করা থাকবে, সেগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বিভিন্ন অংশ ঠিক করার কাজ করবেন তিনি। এ ছাড়া ক্রিপ্টোগ্রাফি নিয়েও কাজ করবেন তিনি।