গত রোববার (১৫ আগস্ট) একপ্রকার বিনাযুদ্ধে কাবুল দখল করে তালেবান। তাদের সশস্ত্র অভিযানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন পশ্চিমাসমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। সংযুক্ত আরব আমিরাত তাকে ‘মানবিক কারণে আশ্রয়’ দিয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, দেশ ছেড়ে পালানোর সময় আশরাফ গানি চারটি গাড়ি ও একটি হেলিকপ্টারভর্তি নগদ অর্থ নিয়ে গেছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট।
গানি সরকারের পতনের পর কাবুলের ক্ষমতা গ্রহণে আফগানিস্তানে ফিরেছেন বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কারণে নির্বাসিত নেতারা। তাদের মধ্যে তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গানি বারাদারও রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র বলছে, তালেবান নতুন সরকার গড়লে তার প্রধান হতে পারেন বারাদার।
এদিকে, তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটির ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে জানিয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের কান্ট্রি ডিরেক্টর মেরি এলেন ম্যাকগ্রোয়ের্টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিন বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বারের মতো খরা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাস সামাজিক ও অর্থনীতিকে পরিবেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে চরম বিধ্বস্ত দেশটি।
এমন সংকটের মুহূর্তেই আফগানিস্তানের নিজস্ব ও দেশটির জন্য বরাদ্দ বিপুল অর্থ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমে আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় সাড়ে নয়শ কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করে মার্কিনিরা। এরপর তাদের চাপেই আফগানিস্তানের জন্য নতুন করে বরাদ্দ ৪৪ কোটি ডলারসহ সব ধরনের সম্পদে আফগানদের প্রবেশাধিকার সাময়িক স্থগিত করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় এখনও নাম রয়েছে তালেবানের। এ কারণে তারা আফগানিস্তানে সরকার গঠন করলেও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনও সম্পদ বা সম্পত্তির নাগাল পাবে না। এর একদিন পরেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মুখপাত্র বলেছেন, বর্তমানে আফগানিস্তান সরকারের স্বীকৃতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে স্পষ্টতার অভাব রয়েছে, যার ফলে এসডিআর বা আইএমএফের অন্য সম্পদগুলোতে দেশটির প্রবেশাধিকার থাকতে পারে না। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা