বিশ্বের ২৫টি দেশের মানুষের ওপর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ভালো ব্যাপার। তবে ৫ শতাংশ মানুষ তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান শন দোহার্তি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কল্যাণে অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। এ ছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি ও মানুষের ক্ষমতায়ন হয়। তবে বাণিজ্যের কারণে যে পরিবর্তন আসে, তাতে মানুষের জীবন বিঘ্নিত হতে পারে। এ পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রেই বেদনাদায়ক হয়। আবার স্থানীয় সংস্কার বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’ এ জরিপে মানুষের যে মনোভাব দেখা গেছে, তা অনেকটা এভাবে ব্যক্ত করা যায়: মানুষ বিশ্বায়নের ভালো দিক নিতে চায় এবং খারাপ দিক বর্জন করতে চায়।
মানুষের মনোভাব হলো, বাণিজ্য ভালো, কিন্তু বিদেশি পণ্য আমদানিতে আরও বেশি বেশি বাধা বা প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা উচিত। অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, বিদেশি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ বাড়ানো হোক। সেবার বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। ৩৭ শতাংশ মানুষ বলেছেন, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধি করা হোক। আর ২৭ শতাংশ বলেছেন, বাণিজ্য বাধা হ্রাস বা অপসারণ করা হোক।
তবে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বলেছেন, বিশ্বায়ন তাদের দেশের জন্য ভালো। মাত্র ১৩ শতাংশ এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। বাকিরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত মত দেননি বা নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে সব দেশে এক রকম ফলাফল দেখা যায়নি। উন্নত বিশ্বের দেশ ফ্রান্সে বিশ্বায়নের পক্ষে ইতিবাচক মত দিয়েছে মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ। আর উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশ মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ বিশ্বায়নের পক্ষে—৭২ শতাংশ। বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে যে প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে, তার আঁচ এ জরিপেও মিলছে।
খুব কম মানুষই এখন মনে করছেন, বিশ্বায়ন ভালো জিনিস। সবচেয়ে বেশি সমর্থন কমেছে মেক্সিকো, কলাম্বিয়া, চিলি ও পেরুতে।
২৫টি দেশের ১৯ হাজার ১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মানুষের এ বিশ্বায়নবিরোধী মনোভাব দূর করতে স্থানীয় চাহিদায় অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া পরিবেশ, কর্মসংস্থান, কর, ডিজিটাল অর্থনীতিসহ অন্যান্য ইস্যুতে জোর দিতে হবে।