আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির উত্তরদিকের সীমান্তবর্তী দেশ তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ।
এক প্রতিবেদনে তাস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববার পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির বৈঠক ছিল। সেখানে এ প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ) প্রস্তাবের অর্থ কি এই যে আমাদের প্রতিবেশী দেশসমূহ ভিসা বা কোনো প্রকার বৈধ অনুমোদন ছাড়া এই মানুষদের আশ্রয় দেবে, যেখানে তারা (যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ) নিজেরা পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া কাউকে নিজেদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয় না?’
‘সমস্যার সমাধান হিসেবে এই ধরনের অপমানজনক প্রস্তাব কেন?’
মধ্য এশিয়ার ৫ দেশ কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কিরগিজস্তান একসময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই দেশসমূহ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর মোট ১৫টি নতুন রাষ্ট্র গঠিত হয়। তবে রাশিয়ার সঙ্গে এই দেশগুলো এখনো নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। সাবেক সোভিয়েত দেশসমূহের মতো মধ্য এশিয়ার এই পাঁচ দেশের নাগরিকরাও পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া অবাধে রাশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেন।
এই নীতি চালু থাকার ফলে আফগান শরণার্থী আশ্রয় দেওয়া হলে ভবিষ্যতে রাশিয়ায় জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, শরণার্থীর ছদ্মবেশে কোনো জঙ্গি রাশিয়া বা তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রবেশ করুক।’
গত মে মাস থেকে আফগানিস্তান দখলে অভিযান শুরু করে তালেবান এবং মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৮টি নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়। গত ১৫ আগস্ট থেকে রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণও তালেবান বাহিনীর হাতে।
গত তিন মাস ধরে আফগানিস্তানের প্রদেশগুলোতে যুদ্ধ-সংঘাত চলার ফলে বাড়ি-ঘর সহায়-সম্বল হারিয়েছেন অসংখ্য আফগান। তাদের একটি ছোট অংশ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তীদেশ ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন; কিন্তু এখনো রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের বড় শহরগুলোতে লাখ লাখ আফগান শরণার্থী দিন-রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে।
দেশটির দক্ষিণ দিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত আছে আফগানিস্তানের। পাকিস্তান সরকার ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, আগে থেকে ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে আশ্রিত অবস্থায় আছেন এবং নতুন কোনো আফগান শরণার্থীকে স্থান দিতে দেশটি অপারগ।
সূত্র : রয়টার্স