জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো তাদের করা হিসাবের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত বছরে মার্চ থেকে সবচেয়ে বেশি সময় বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের ৫৩ শতাংশ দেশ সম্পূর্ণরূপে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও টানা ৬১ সপ্তাহ বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি বাংলাদেশে।
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত টানা ৭৬ সপ্তাহ বন্ধ আছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু সাধারণ বর্ষপঞ্জিকার মাধ্যমে ৩০ আগস্টের হিসাবে ইউনেসকো জানিয়েছে, ৬১ সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সব দেশকে ছাড়িয়ে শীর্ষে অবস্থান বাংলাদেশের।
শিক্ষাবর্ষকে ভিত্তি হিসিবে ধরে ইউনেসকোর দেওয়া হিসাবে বাংলাদেশ ছাড়া ভেনিজুয়েলাতেও ৬১ সপ্তাহ ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, হন্ডুরাসে ৫৯ সপ্তাহ, কুয়েতে ৫৭ সপ্তাহ, পানামায় ৫৫ সপ্তাহ এবং মেক্সিকো ৫৩ সপ্তাহ ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় টানা ৪৬ সপ্তাহ, নেপালে ৩৩ সপ্তাহ, আফগানিস্তানে ৩০ সপ্তাহ, ভারতে ২৫ সপ্তাহ, পাকিস্তানে ২৩ সপ্তাহ, ভুটানে ২০ সপ্তাহ, মালদ্বীপে ১৪ সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। চীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল মাত্র ৯ সপ্তাহ।
ইউনেসকো জানিয়েছে, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মহামারি চলাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আংশিকভাবে খোলা রেখেছে। আর লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হার নিয়ে ব্রাজিল সম্পূর্ণভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল ৩৮ সপ্তাহ।
এদিকে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি অবশ্য আর বাড়ছে না।
ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড মহামারির কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।