মূলত কোম্পানির ওপর মানুষের আস্থা হ্রাসের কমে যাওয়ার কারণে শেয়ারের দাম কমছে। জানা গেছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এভারগ্র্যান্ড শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছে। আরেক আবাসন কোম্পানি হপসন ডেভেলপমেন্ট এভারগ্র্যান্ডের ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনবে, এ নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছে। তবে বিক্রির শর্ত নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় এই আলোচনা মাঝপথে আটকে আছে।
এভারগ্র্যান্ডের ঋণের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলার। আর কোম্পানিটির মোট দায় চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ সমপরিমাণ। যে হপসন ডেভেলপমেন্ট এভারগ্র্যান্ড কিনতে চায়, তারাও এভারগ্র্যান্ডের কাছে টাকা পায়। ধারণা করা হচ্ছিল, এই ক্রয় চুক্তির মধ্য দিয়ে সেই দেনা শোধ হবে।
বিগত কয়েক বছরই চীনের আবাসন খাতসহ করপোরেট জগতের বিপুল ঋণ নিয়ে আলোচনা চলছে। ২০০৭-২০০৮ সালে পশ্চিমের ঋণ সংকটের মতো সেখানেও ঋণ সংকট হতে পারে, এমন শঙ্কা ছিল। দুই বছর আগে চীনা সরকার বড় বড় আবাসন কোম্পানির ঋণের লাগাম টানতে নতুন নিয়ম প্রণয়ন করে। এভারগ্র্যান্ড তখনই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে হোঁচট খায়। এরপর পরিস্থিতির কেবল অবনতিই হয়েছে। তখন থেকেই এভারগ্র্যান্ডের শেয়ার মূল্য কমতে থাকে এবং ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিগুলো তার বন্ডের মান অবনমন করতে থাকে।
এভারগ্র্যান্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা হুই কা ইয়ান বিবিসিকে বলেন, তাঁরা এখন ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াতে চান এবং বাকি ঋণদাতাদের সঙ্গে বিকল্প বন্দোবস্তে আসতে চান। কিন্তু এভারগ্র্যান্ড যে তার সব আর্থিক দায় মেটাতে পারবে, তেমন সম্ভাবনা কম। সম্প্রতি তারা দুবার বিদেশি ঋণদাতাদের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে।
বিবিসির তথ্যানুসারে, চীনের আবাসন কোম্পানিগুলোর মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ কোটি ডলারের বেশি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির জন্য এটি অনেক বড়। সেই সঙ্গে চীনের মাথাব্যথার আরও কিছু কারণ আছে—জ্বালানি সংকট, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি। জ্বালানি সংকটের কারণে ইতিমধ্যে জুন-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে।