সুদানের সেনা জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠার পর হামদাক ও তার স্ত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার দারিদ্রপীড়িত এই দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর সব ধরনের আর্থিক সহায়তা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস হামদককে আটকের নিন্দা ও দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। হামদকের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুদানের রাজধানী খার্তুমে নিজেদের বাসভবনে ফিরেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদক এবং তার স্ত্রী। বাড়িতে ফিরলেও সামরিক বাহিনী সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
তবে গত সোমবার অভ্যুত্থানের পর যেসব বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছিল; তারা এখনও মুক্তি পাননি এবং তাদের কোথায় আটকে রাখা হয়েছে সেটিও জানা যায়নি।
সুদানের গণতন্ত্রের পথে যাত্রা ও গতি নিয়ে দেশটির সামরিক-বেসামরিক নেতাদের কয়েক সপ্তাহের টানাপোড়েনের পর সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেন জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান।
আগামী মাসে জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান নেতৃত্বাধীন দেশ পরিচালনাকারী সার্বভৌম কাউন্সিলের নেতৃত্ব বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। এই পদক্ষেপের বাস্তবায়ন হলে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা হ্রাস পেতো। তার আগে এই অভ্যুত্থান ঘটে দেশটিতে।
মঙ্গলবারও দেশটির গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় রাস্তা অবরোধ করে রাজধানী খার্তুমে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় টায়ার ও কাঠে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভে গুলিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের প্রাণ গেছে।
আল-বুরহান দাবি করেছেন, দেশে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই গত সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। তার দাবি, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে নিরাপত্তার জন্য সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমরা যেটা প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে আসলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী তার নিজের বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু আমাদের ‘আশঙ্কা’ ছিল, এতে তার ক্ষতি হতে পারে।’