গত ১৬ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট বা ব্যবসা করার সূচকবিষয়ক প্রতিবেদন আর না তৈরি করার কথা জানায় বিশ্বব্যাংক। বেশ কিছু অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর থেকে ওই সময় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
রেইনহার্ট বলেন, বিকল্প তৈরির জন্য মূল কিছু ধারণা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তর্নিহিত পদ্ধতি সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতার জন্য একটি নির্দেশনামা, কোম্পানিগুলোর জরিপ ডেটার ওপর অধিক নির্ভরতা এবং র্যাঙ্কিং দেশগুলোর ওপর কম ফোকাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবার অন্তর্নিহিত খুঁটিনাটি সবই জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে। কারণ, জনসমক্ষে প্রচার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
ব্যবসা করার পরিবেশ কোথায় সবচেয়ে অনুকূল, তার নিরিখে ২০০৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বের ১৯০ দেশের একটি তুলনামূলক তালিকা ও রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছিল বিশ্বব্যাংক। এ প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই বহু বিদেশি বিনিয়োগকারী কোন দেশে বিনিয়োগ করবে বা কোন দেশ থেকে সরে আসবে, সেই সিদ্ধান্ত নিত। তবে ২০১৮ ও ২০২০ সালে যে ব্যবসা সহজীকরণ সূচক প্রকাশ করা হয়, সেখানে তথ্য-উপাত্ত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কিছু অসংগতি হয়। ওই প্রতিবেদন দুটি প্রকাশ করা হয় অক্টোবর ২০১৭ ও ২০১৯ সালে। তাতে তথ্য-উপাত্তের যে পরিবর্তন পাওয়া যায়, তা ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদন তৈরির পদ্ধতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না। বিষয়টি প্রথম উল্লেখ করেন বিশ্বব্যাংকের সে সময়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ পল রোমার।
তখন পল রোমার বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের একজন সাবেক পরিচালক এমনভাবে জালিয়াতি করে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচক নির্ণয়ের পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন, যা চিলির ক্ষমতাসীন সমাজতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়ে ব্যবহার করা হয়। ওই পরিচালকের কারণে চিলির র্যাঙ্কিং পিছিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিষদ পরবর্তী ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট তৈরির বিষয়টি স্থগিত করে এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করতে শুরু করে। সব পর্যালোচনা, নিরীক্ষার ফলাফল এবং ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পর্ষদের যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়, তার সঙ্গে ডুয়িং বিজনেসের জন্য পাওয়া সব তথ্য পর্যালোচনা করার পর বিশ্বব্যাংকের গ্রুপ ম্যানেজমেন্ট ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে এ সূচক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।