অতিরিক্ত ওষুধ সেবনে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষাধিক প্রাণহানি

অতিরিক্ত ওষুধ সেবনে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষাধিক প্রাণহানি
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে এক লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। চলতি বছরের এপ্রিলের আগের ১২ মাসে এতো বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণহানির এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া কেবল মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে দেশটিতে এতো বিপুল মানুষের প্রাণহানির ঘটনা এটাই প্রথম এবং মারা যাওয়া বেশিরভাগই আফিম জাতীয় ওষুধ সেবন করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)-র হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত গত ১২ মাসে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবন করে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১ লাখ ৩০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই কারণে আগের এক বছরে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৭৮ হাজার ৫৬ জন। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় গত এক বছরে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবন করে দেশটির মৃত্যু বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

সিডিসি বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রাণ হারানো এক লাখ ৩০৬ জনের মধ্যে আফিম জাতীয় ওষুধ সেবন করে মারা গেছেন ৭৫ হাজার ৬৭৩ জন। এর মধ্যে প্রধানভাবে দায়ী সিনথেটিক ও ফেনটানিল জাতীয় ওষুধ।

আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটার তথ্য অনুযায়ী, ওই একই সময়সীমাতে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান ৫ লাখ ৮ হাজার মানুষ।

সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারির সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একাকী ওষুধ সেবনের প্রবণতা বেড়েছে। যা প্রয়োজনের চেয়ে অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবনের অন্যতম কারণ। করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সেবা নিশ্চিত করা বা ব্যক্তি উদ্যোগে সেবা নেওয়াতেও সৃষ্টি হয় আনীহার। অনেকেই অবশ্য এটিকে করোনা প্রতিরোধে অতিরিক্ত সাবধনতা বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে নির্ধারিত ওই সময়সীমায় যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে প্রাণহানি সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই অঙ্গরাজ্যটিতে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৯ জনে। ভারমন্টের পরই সর্বোচ্চ ৬২ শতাংশ বেড়েছে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে এবং কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে প্রাণহানি বেড়েছে ৫৫ শতাংশ।

বিবিসি জানিয়েছে, অধিক মাত্রায় ওষুধ সেবনের কারণে হওয়া প্রাণহানি ১২ মাসের নির্দিষ্ট এই সময়সীমায় বন্দুক সহিংসতায় নিহত কিংবা সড়ক দুর্ঘটনা এমনকি বিভিন্ন সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারিকে পরাজিত করার লক্ষ্যে আমরা যখন অগ্রগতি করছি, তখন আমরা এই ক্ষতিকেও এড়িয়ে যেতে পারি না। তাদের এই মৃত্যু পরিবার, স্বজন এবং দেশের সকল কমিউনিটিকে ব্যথিত করেছে।’

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের এই প্রবণতা খতিয়ে দেখতে এবং ওভারডোজ এপিডেমিকের সমাপ্তি নিশ্চিত করতে সক্ষমতার পুরোটা দিয়েই কাজ করবে আমার প্রশাসন।’

হৃদরোগে আক্রান্ত এবং সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। হৃদরোগ জটিলতায় সেই বছর দেশটিতে ৬ লাখ ৬০ হাজার প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬ লাখ এবং অনিচ্ছাকৃত আঘাতের কারণে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া