গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরায়েল, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালিতেও নতুন এ ধরনের সন্ধান মিলেছে। ডব্লিউএইচও করোনার নতুন ধরনের নাম দিয়েছে ‘ওমিক্রন’। ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। তবে ওমিক্রন করোনার অন্য ধরনের তুলনায় কম নাকি বেশি মারাত্মক, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা।
করোনার অন্য ধরনের সঙ্গে ওমিক্রনের তুলনার প্রশ্নে সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, ‘নতুন ধরনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা প্রয়োজন।’
সবশেষ ভারতে শনাক্ত হওয়া অতি সংক্রামক ডেলটা ধরন বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। স্বামীনাথন বলেন, ডেলটার চেয়েও অনেক বেশি সংক্রামক হতে পারে ওমিক্রন; যদিও এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি। কয়েক দিনের মধ্যে ওমিক্রন ধরন নিয়ে আরও তথ্য জানা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ডব্লিউএইচওর এ বিজ্ঞানী মনে করেন, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়তে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কৌশল প্রণয়ন জরুরি। টিকাদান ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক পদক্ষেপগুলোকে এখনো অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি মনে করেন, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য ওমিক্রন একটি সতর্কবার্তা হতে পারে।
করোনা প্রতিরোধে মাস্কের ব্যবহার খুব জরুরি বলে মনে করেন স্বামীনাথন। তিনি বলেন, মাস্ককে ‘পকেটে বহনযোগ্য প্রতিষেধক’ নামে ডাকা হয় এবং এটি খুব কার্যকর। বিশেষ করে কোনো আবদ্ধ কক্ষে গেলে মাস্ক ব্যবহার জরুরি। এ ছাড়া সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেওয়া, গণজমায়েত এড়িয়ে চলা, নতুন ধরনের জিনোম উন্মোচন করা এবং এবং অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে সেদিকে নজর রাখার কাজগুলোও চালিয়ে যেতে হবে।
নতুন ধরন শনাক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে কার্যকর সমাধান বলে মনে করছেন না স্বামীনাথন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঝুঁকি মূল্যায়নের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পূর্ববর্তী সময়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে করোনা ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।’ তিনি মনে করেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িক সময়ের জন্য হওয়া উচিত। নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি নিয়ে নিয়মিত পর্যালোচনার ওপরও জোর দিয়েছেন এ বিজ্ঞানী।