গত চার মাসের মধ্যে ভারতে সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার

গত চার মাসের মধ্যে ভারতে সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা সহজ হচ্ছে না বিশ্বের কোনো দেশের পক্ষেই। সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু সূচকের চিত্র ভালো হলেও ব্যষ্টিক পর্যায়ে তার বিশেষ প্রভাব নেই। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের বেলায় এ কথা আরও বেশি খাটে। ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএমআইইর পরিসংখ্যানে জানা গেল, গত ডিসেম্বরে দেশটিতে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এর আগে গত আগস্টে সেই হার ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলের উদ্বেগ, করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনের ধাক্কায় সংক্রমণ ইদানীং বাড়ছে। চোখ রাঙাচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। এ অবস্থায় অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর পথ তো রুদ্ধ হতে পারেই, সেই সঙ্গে বেকারত্বের হার আরও বৃদ্ধির শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সিএমআইইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগস্টের পর উৎসবের মৌসুমে ভারতে বেকারত্বের হার কিছুটা হলেও কমেছিল, যদিও তা বিশেষ আহামরি কিছু ছিল না। নভেম্বরে বেকারত্বের হার দাঁড়ায় ৭ শতাংশ। কিন্তু ডিসেম্বর মাসেই আবার তা একলাফে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছে যায়। উদ্বেগের আরও বড় কারণ হলো, ডিসেম্বরে ভারতের শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে গ্রামাঞ্চলে তা কিছুটা কম—৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গ্রামাঞ্চলে মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ১০০ দিনের কাজসহ উপার্জনমূলক কিছু প্রকল্প সরকারের আছে। রবি মৌসুমে চাষের কাজেও যুক্ত হয়েছেন অনেকে। ফলে গ্রামে বেকারত্বের হার কিছুটা হলেও কম। কিন্তু করোনার আক্রমণের পর থেকে শহরের ছোট-মাঝারি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিপদ এখনো কাটেনি। তারই প্রভাব পড়েছে পরিসংখ্যানে।

অর্থনীতিবিদেরা আরও বলেন, গত এক বছরে ভারতের অর্থনীতি যতটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, তাতে বৃহৎ সংগঠিত খাতের অবদানই বেশি। আর তা হয়েছে ছোট-মাঝারি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ক্ষতির বিনিময়ে। এ খাতেই কর্মসংস্থান হয় সবচেয়ে বেশি। ফলে বিরূপ প্রভাব এড়িয়ে থাকতে পারেনি কাজের বাজারও। সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন বছরের গোড়ায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ চালু করেছে একাধিক রাজ্য। কাজের পরিসংখ্যানে তার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।

সিএমআইইর কর্তা মহেশ ব্যাসের বক্তব্য, ডিসেম্বরে বাজারে কাজ বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাজের সন্ধানে মাঠে নামা মানুষের তুলনায় তা নিতান্তই কম।

ভারতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভারতে বেকারত্বের হার ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ—চার দশকের সর্বোচ্চ। তখন ভারতের কেন্দ্র সরকার দাবি করেছিল, ওই প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ। কিন্তু নির্বাচনে বিজেপির বিপুল জয়ের পর মোদি সরকার সেই প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার করে নেয়।

সিএমআইইর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে বেকারত্বের হার বেশিই থাকছে। সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তর যেহেতু দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক বেকারত্বের হিসাব দেয় না, তাই বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান হলেও সিএমআইইর পরিসংখ্যান অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের কাছে গুরুত্ব পায়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া