দেশটির সরকারের বরাত দিয়ে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। সর্বশেষ ঘটনার মতো গত বছরও নাইজারে বহু হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং সেসব হামলায় শত শত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
রয়টার্স বলছে, গত রোববার নাইজারের তিলাবেরি অঞ্চলে পার্শ্ববর্তী দেশ মালির সীমান্তের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের বহনকারী একটি বাসে হামলার এই ঘটনা ঘটে। হামলার কথা প্রকাশ করে মঙ্গলবার নাইজারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলকাসৌম ইনদাতৌ বলেন, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে সশস্ত্র ডাকাতরা এই হামলা করে এবং তাদেরকে এখনও চিহ্নিত করা যায়নি।
এক বিবৃতিতে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ১৮ জনের মধ্যে ১৩ জন স্থানীয় ফোনে গান্দা গ্রামের বাসিন্দা এবং বাকি পাঁচজন তিজে গোরোউ গ্রামের বাসিন্দা।
নাইজারের পশ্চিমের তিলাবেরি অঞ্চলে এর আগের হামলাগুলোর জন্য স্থানীয় কর্মকর্তারা ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক গোষ্ঠীকে দায়ী করেছিল। গত বছরের জানুয়ারিতে ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় সেখানকার অন্তত ১০০ বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
তিলাবেরির সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে প্রতিবেশী দেশ মালির। ইসলামপন্থি মিলিশিয়াদের এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই তাদের তৎপরতা চলছে। যেই সহিংসতা ছড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী দুই দেশ নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে। যা পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য শঙ্কার।
পশ্চিম আফ্রিকার ৩ দেশ নাইজার, মালি ও বুরকিনা ফাসোর বেশ কিছু অঞ্চল উষর-অনুর্বর ও দারিদ্র্যপীড়িত বলে পরিচিত। এসব এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গিগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের তৎপরতা বাড়ছে।
এছাড়া নাইজারের দুই প্রতিবেশী দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসোর সীমান্ত এলাকার এই জায়গাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল কায়েদাপন্থি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
নাইজারে আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের তৎপরতাও আছে। গত কয়েক বছর ধরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত চলছে তাদের। এই সংঘাতে ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষের, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৮৯টি দেশের মধ্যে দ্ররিদ্র দেশ হিসেবে নাইজারের অবস্থান নিচের দিকে। প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো এই দেশটিও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে।