বিশ্বের মোট গম রপ্তানির ২৯ শতাংশই সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ভুট্টা রপ্তানিতেও তাদের অংশ প্রায় ১৯ শতাংশ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো আগুন লেগেছে।
গত সপ্তাহে শিকাগোর বাজারে গমের দাম বেড়েছে একলাফে ৪০ শতাংশের বেশি, যা তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের এ বাজারে গমের দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি কোয়ার্টার বুশেল (এক বুশেলে ৬০ পাউন্ড বা ২৭ কেজি ২১৫ গ্রাম) ১২ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার, যা ২০০৮ সালের মার্চের পর থেকে সর্বোচ্চ।
এদিন ভুট্টার দাম ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি কোয়ার্টার বুশেল হয়েছে ৭ দশমিক ৭৫ ডলার ও সয়াবিনের দাম ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে হাফ বুশেল হয়েছে ১৬ দশমিক ৯৫ ডলার। ভুট্টা ও সয়াবিনের এই দাম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
ইউরোপের এক ব্যবসায়ী বলেছেন, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে গম-ভুট্টা রপ্তানি আবার শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না। যুদ্ধরত এ দেশ দুটি বিশ্বের ৮০ শতাংশ সূর্যমুখী তেলের রপ্তানিকারক। ফলে দাম বেড়েছে এরও।
যুদ্ধে ইউক্রেনের বন্দরগুলো বন্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে আমদানিতে অনাগ্রহী ব্যবসায়ীরা এখন পণ্যগুলোর বিকল্প উৎস খুঁজছেন। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে গম রপ্তানির চাহিদা বেড়ে গেছে।
অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন, বিকল্প উৎসগুলোতে হঠাৎ এভাবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কিছু দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের জন্য পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। কিছু বড় আমদানিকারক আশঙ্কা করছেন, দাম আরও বাড়তে পারে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যে সব ধরনের শস্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে হাঙ্গেরি। বুলগেরিয়া সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তারা গমের মজুদ বাড়াচ্ছে। সেখানেও একই ধরনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা। সূত্র: রয়টার্স।