সংস্থাটির তথ্যমতে, রাশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম বড় গম রপ্তানিকারক, এক্ষেত্রে ইউক্রেনের অবস্থান পঞ্চম। এ দুটি দেশ বিশ্বে যব সরবরাহের ১৯ শতাংশ, গমের ১৪ শতাংশ ও ভুট্টার চার শতাংশ জোগান দেয়। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য রপ্তানির এক-তৃতীয়াংশের বেশি আসে রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে। তাছাড়া, রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম সার সরবরাহকারীও বটে।
কিন্তু যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন এবারের মৌসুমে ফসল তুলতে পারবে কি না তা নিয়ে যেমন সংশয় রয়েছে, তেমনি নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার খাদ্য রপ্তানিও অনিশ্চিত। এএফও’র মতে, ইউক্রেনে হয়তো ২০২২-২৩ মৌসুমে শীতকালীন শস্য, ভুট্টা ও সূর্যমুখীর মতো ফসল চাষে ব্যবহৃত জমির ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অনাবাদিই থেকে যাবে।
এফএও মহাপরিচালক কিউ ইউ ডং আশঙ্কাপ্রকাশ করে বলেন, এসব পণ্যের প্রধান দুই রপ্তানিকারকের কৃষিকাজে ব্যাঘাত বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
কৃষি বাজারে রাশিয়া-ইউক্রেনের অনুপস্থিতিতে তৈরি ঘাটতির সামান্য অংশই অন্য দেশগুলো পূরণ করতে পারবে বলে মনে করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। তাদের মতে, এই সংকট বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও পশুখাদ্যের দাম আট থেকে ২২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে।
এফএও জানিয়েছে, বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশ গমের জন্য ৩০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি রাশিয়া-ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল, যাদের মধ্যে অনেকেই স্বল্পোন্নত দেশ। সাম্প্রতিক যুদ্ধ তাদের আরও অনিশ্চয়তায় ফেলেছে।
সংস্থাটি বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী অপুষ্টির শিকার মানুষের সংখ্যা ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
গত ফেব্রুয়ারিতে এফএও’র খাদ্যমূল্য সূচক নতুন রেকর্ড ছুয়েছে। যুদ্ধের প্রভাবে আগামী মাসগুলোতে এটি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বাড়তে পারে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। তারপরে সাব-সাহারান আফ্রিকাসহ পূর্ব ও উত্তর আফ্রিকায় খাদ্যপণ্যের দামে রকেটগতি দেখা যেতে পারে।
এ অবস্থায় অন্য দেশগুলোকে উৎপাদিত খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা না দিতে অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘ। অবশ্য ইউক্রেন যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে এরই মধ্যে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপের বেশ কিছু দেশ।
সূত্র: রয়টার্স