আরামকো আগামী পাঁচ বছরে তেলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে চায়। বিবিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৭ সালের মধ্যে দৈনিক অপরিশোধিত তেল উৎপাদন ক্ষমতা ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করতে চায় তারা।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবে আরামকোর স্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ করে আন্তসীমান্ত সশস্ত্র ড্রোন হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরে এই ঘোষণা আসে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব একটি সামরিক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
গত কয়েক মাসে জ্বালানির দাম অনেকটাই বেড়েছে। আর ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পর জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার তেল-গ্যাসে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে জ্বালানির তেলের ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। দামও বাড়ছে তর তর করে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো জ্বালানির বিকল্প উৎসের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে।
সৌদি আরামকোর এই পদক্ষেপে পশ্চিমা রাজনৈতিক নেতারা খুশি হবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। তবে আরামকো রাতারাতি জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধি করবে, তা করতে পারবে তা নয়, আগামী পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে তারা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
বিষয়টি হচ্ছে, বিশ্বসম্প্রদায় মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় ছিল। সব দেশ এখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। ঠিক সেই সময় শুরু হলো ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ। যুদ্ধের ধাক্কায় জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হুমকির মুখে পড়ে। এই বাস্তবতায় জ্বালানি তেলের দাম কমানো জরুরি বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে গত সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সৌদি আরবকে স্বল্প মেয়াদে বিশ্ববাজারে অতিরিক্ত তেল ছাড়তে রাজি করানোর উদ্দেশে সেই দেশ সফর করেন।
সৌদি আরব তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেকের অন্যতম সদস্য। ওপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তারাই সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদন করে। ফলে তেলের বাজারে তারা বড় খেলোয়াড়। বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদি আরব বাজারে তেল ছাড়লে দাম অনেকটাই কমবে।
সৌদি আরামকো বলেছে, এ বছর তাদের মূলধনি ব্যয় ৪ হাজার ৫০০ কোটি থেকে ৫ হাজার কোটি ডলার দাঁড়াবে। গত বছর যা ছিল ৩ হাজার ১৯০ কোটি ডলার।
এদিকে ২০২১ সালে আরামকোর মুনাফা দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি ডলার, ২০২০ সালে যা ছিল ৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। সূত্র: বিবিসি।