গতকাল জাতীয় পরিষদের জারি করা আলোচ্যসূচিতে উল্লেখ করা ৬টি বিষয়ের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। সরকার টিকিয়ে রাখতে হলে ইমরান খানের ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগবে। কিন্তু শরিকরা ত্যাগ করায় এবং তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা সরে যাওয়ায় ইমরান খানের প্রতি এখন ১৪২ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন রয়েছে। তাই অনাস্থা ভোটে ইমরানের পরাজয় অনেকটাই নিশ্চিত।
তারপরও ইমরান খানের দিকে তাকিয়ে পুরো পাকিস্তান। গতকাল শুক্রবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ইমরান খানের ভাষণ দেওয়ার কথা ছিলো। শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করবেন নাকি অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করবেন- সেদিকে তাকিয়ে সবাই। গতকাল শুক্রবার তিনি মন্ত্রীপরিষদ এবং ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) দলের পার্লামেন্টারি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ক্রিকেটীয় ভাষায় বলেছেন, শেষ বল পর্যন্ত তিনি খেলতে চান। পাকিস্তানের জন্য সব সময় লড়াই করবেন।
গত রবিবার অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইমরান খানের দল ওই প্রস্তাব আটকে দেয়। অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বলেন, এই অনাস্থা প্রস্তাব পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এরপর ইমরানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নেয়। এছাড়া বিরোধীরাও সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করে সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জাতীয় পরিষদ ও সরকার পুনর্বহাল হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, শনিবার জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে। শনিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে দশটায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে। এই ভোট শনিবারই হতে হবে, কোন কারণ দেখিয়ে এই অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না। এ অবস্থায় অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে ইমরানকে। আদালতের রায়ে আরো বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সফল হলে জাতীয় পরিষদ নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে পারবে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সহ-সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি বৃহস্পতিবার বলেছেন, অনাস্থা ভোটের পর পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হবেন। ইমরান খান হবেন বিরোধী দলীয় নেতা। আমি আশা করি ইমরান খান বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে গণতান্ত্রিক ভূমিকা পালন করবেন।
এদিকে গতকালই জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছে বিরোধীরা। যিনি গত রবিবার বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আটকে দিয়েছিলেন।