গত মাসে চীনে শিল্পোৎপাদন কমেছে

গত মাসে চীনে শিল্পোৎপাদন কমেছে
সম্প্রতি চীনে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ায় ৪৫টি শহরে লকডাউন জারি করে সরকার। এর জেরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর এপ্রিল মাসে চীনের কলকারখানার উৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লকডাউনের জন্য সৃষ্ট সরবরাহ-সংকটের কারণে এই নিম্নমুখী প্রবণতা।

চীনের দ্য অফিশিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স সূচক গত মার্চে ছিল ৪৯ দশমিক ৫। এপ্রিলে তা কমে ৪৭ দশমিক ৪ পয়েন্টে নেমে আসে। চলতি সপ্তাহে চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (এনবিএস) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এর আগে বিভিন্ন জরিপেও সূচক কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স কমে ৪৭ দশমিক ৩ পয়েন্টে নামতে পারে। আল-জাজিরা সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

এই মানদণ্ডে মূলত নির্মাণ ও পরিষেবা খাতের অবস্থা পরিমাপ করা হয়, তার সঙ্গে অন্যান্য খাতও থাকে। দেখা গেছে, মার্চ মাসে নির্মাণ ও পরিষেবা খাতের সূচক ৪৮ দশমিক ৪ পয়েন্ট থেকে কমে এপ্রিল মাসে দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক ৯ পয়েন্ট, যা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন। এমনকি ৪৬ পয়েন্ট ধরে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, এটা তারও অনেক কম। সাধারণত এ পয়েন্ট ৫০-এর ওপরে গেলে অর্থনীতি সম্প্রসারণমূলক বলে ধরে নেওয়া হয়। আর এর নিচে থাকলে বোঝা যায়, অর্থনীতি সংকোচনমুখী।

উৎপাদনের এই সংকোচনের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, উৎপাদন ও চাহিদা—দুটিই একযোগে কমেছে। আলাদা বিবৃতিতে দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া, বিশেষ করে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে হঠাৎ করে সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক উৎপাদক কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেকেই কাজ বন্ধ করতেও বাধ্য হয়েছেন।

আবার সংক্রমণের সরাসরি আঘাত পড়েছে পরিষেবা খাতে। এনবিএসের জ্যেষ্ঠ পরিসংখ্যানবিদ ঝাও কিংঘে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে পরিষেবা খাতের দ্রুত অবনতি হয়েছে। এ খাতের ২১ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টিতেই পতন হয়েছে বলে সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে। এর মধ্যে আছে আকাশপথে যোগাযোগ, আবাসন ও কেটারিংয়ের মতো খাত। এসব খাতে বেশ বড় ধরনের অবনমন দেখা গেছে।

চীনের বেশ কিছু শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ফলে অনেক শহরের অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বেইজিংয়ের ওপর চাপ বাড়ছে। অনেক উৎপাদকই এখন বিকল্প উপায় খুঁজতে শুরু করেছে। এর মধ্যে আছে তথাকথিত ক্লোজড লুপ ব্যবস্থার প্রবর্তন, যেখানে সংক্রমণ এড়াতে কর্মীরা কারখানার ভেতরেই অবস্থান করেন। তাঁদের নিয়মিত কোভিড পরীক্ষাও করানো হয়। বাইরের জগতের সঙ্গে ভেতরের কোনো যোগাযোগ হয় না, তাই সংক্রমণের ভয়ও থাকে না। তবে সব শহরে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা সম্ভব হয় না।

অন্যদিকে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় সংকটের কারণে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির সংকট আছে। সংক্রমণের কারণে বিধিনিষেধ আছে চলাচল ও সীমান্ত পারাপারে। পাশাপাশি লকডাউনের কারণে মানুষ বাইরে বের হতে না পারায় কমেছে ভোক্তা ব্যয়, সে ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত। চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় ভোক্তা ব৵য় কমেছে। এতে উৎপাদন খাতে সরাসরি প্রভাব পড়ছে।

এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে সহায়তা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চীনের নীতিনির্ধারকেরা। শুক্রবার উচ্চ পর্যায়ের এক পলিট ব্যুরো বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে যথাযথ নীতি গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আগের মতো শূন্য কোভিড নীতি ফিরিয়ে আনা হবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়। বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদই মনে করেন, শূন্য কোভিড নীতি উন্নয়নের জন্য বড় বাধা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া