জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির প্রধান ডেভিড বিসলি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, ‘মানুষ পরিবারবর্গ ও বিশেষ করে শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারলে নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।’ এ বাস্তবতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্যসহায়তা দিচ্ছে জাতিসংঘ। এতে আবার হচ্ছে কী, এক অঞ্চলের ক্ষুধার্ত শিশুর মুখের গ্রাস আরেক অঞ্চলের ক্ষুধায় মরণাপন্ন শিশুর মুখে তুলে দিতে হচ্ছে।
ডেভিড বিসলি বলেন, যেসব দেশে সামাজিক নিরাপত্তা জাল নেই, সেখানে চরমপন্থী রাজনৈতিক শক্তিগুলো এ পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। এরপর সেখানে দুর্ভিক্ষ হবে, দাঙ্গা হবে; আর অনিবার্যভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পরিণতিতে গণ–অভিবাসন ঘটবে।
একই সঙ্গে আরও খারাপ খবর শুনিয়েছেন ডেভিড বিসলি। তিনি বলেন, এ বছর খাদ্যের দাম বাড়লেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু আগামী বছর বাজারে খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে।
একেক দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি একেকভাবে অনুভূত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষেরা হয়তো নেটফ্লিক্স দেখা ছেড়ে দেবে, সেই অর্থ বাঁচিয়ে তারা খাবার কিনে ফেলতে পারবে। কিন্তু আফ্রিকার দেশ চাদ, মালি ও ইথিওপিয়ার মানুষের দুর্দশার অন্ত থাকবে না।
একই রকম পূর্বাভাস দিয়েছে বৈশ্বিক ঝুঁকি ও কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভেরিস্ক ম্যাপলক্রফট। ১৩২টি দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামী ৬ মাসের নাগরিক অস্থিরতা সূচক (সিভিল আনরেস্ট ইনডেক্স) প্রকাশ করেছে তারা। প্রতিবেদনে তারা বলেছে, জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধিতে বিশ্বের সব দেশেই চাপ বাড়ছে৷ মধ্য আয়ের দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে তারা মনে করছে। তাদের সূচকে উচ্চ ঝুঁকি বা চরম ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বিশ্বব্যাংকের নিম্নমধ্যম বা উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ।
এদিকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জনরোষের মুখে শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। কয়েক মাস আগে কাজাখস্তানেও অস্থিরতা দেখা দেয়। ম্যাপলক্রফট বলছে, চলতি বছর অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতিতেও এমন ঝুঁকির শঙ্কা আছে। এ ক্ষেত্রে যে ১০টি দেশকে আলাদাভাবে নজরে রাখার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো হলো আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মিসর, তিউনিসিয়া, লেবানন, সেনেগাল, কেনিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন।