ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটিতে ওই চিকিৎসকরা লিখেছেন, তারা যে ওষুধগুলোর সমন্বয়ে করোনা রোগীর চিকিৎসার কথা বলছেন তা নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। কিন্তু এটিও চিকিৎসার একটি পদ্ধতি হতে পারে।
বর্তমানে রেমডিসিভির নামের একটি ওষুধকে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যদিও এ ওষুধটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্যায়ে রয়েছে এখনও। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, এ ওষুধটি করোনা চিকিৎসায় ‘কার্যকর’। তবে রেমডিসিভির ওষুধটির সরবরাহ এখনও অত্যন্ত সীমিত।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. কোকো-ইয়ুং ইউয়েন ও তার সহকর্মীরা কয়েকটি ওষুধের সমন্বয়ে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলেন। তারা এইচআইভির ওষুধ রিটোনাভির ও লোপানিভির-এর সঙ্গে সাধারণ সংক্রমণরোধী ওষুধ রিবাভিরিন এবং মাল্টিপল স্কলেরোসিস চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ বেটা ইন্টারফেরন-এর সমন্বয় ঘটান।
গবেষকরা এমন রোগীদের বেছে নেন যাদের সবারই সাত দিন আগে (গবেষণার সময় থেকে) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাদের হালকা থেকে মাঝারি মাত্রায় উপসর্গ ছিল।
ডা. ইউয়েনের সহকর্মীরা কিছু রোগীর ওপর শুধু এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত দু’টি ওষুধের প্রয়োগ করেন। বাকিদের ওপর এইচআইভির দু’টি ওষুধসহ সাধারণ সংক্রমণরোধী ও মাল্টিপল স্কলেরোসিস চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের ককটেল প্রয়োগ করা হয়।
যাদের ওপর ককটেল প্রয়োগ করা হয় তারা সাত দিনের মধ্যেই করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠেন। আর যাদের ওপর শুধু এইচআইভির ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তারা ১২ দিন পরও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তবে এই চিকিৎসায় সামান্য কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
তারপরও এসব ওষুধের সমন্বয়ে উদ্ভাবিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে আশা দেখছেন ডা. পিটার চিন-হং। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান ফ্রান্সিসকোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করছেন। ডা. পিটার বলেন, এই গবেষণার ফল সত্যিই স্বস্তিদায়ক। কারণ গবেষকরা দেখিয়েছেন, রেমডিসিভির ছাড়া অন্য ওষুধও করোনার চিকিৎসায় কাজ করতে পারে।