বছরের শুরু থেকেই মূল্যস্ফীতির কারণে সমস্যায় পড়েছে ভারতের আমজনতা। তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে রুপির দাম। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রুপির এই দরপতনের নেপথ্যে একাধিক বাহ্যিক কারণ রয়েছে। পাশাপাশি এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টার অভাবও আছে বলে মনে করেন অনেকে।
পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাবও পড়েছে ভারতের বাজারে। শুধু ভারত নয়, এই যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির খোলনলচে বদলে দিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক সংকটের কারণে ৪ থেকে ৭ শতাংশ পতন ঘটেছে মুদ্রার; স্বাভাবিকভাবেই যা প্রভাবিত করেছে সামগ্রিক অর্থবাজারকে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতীয় মুদ্রা একই ভাবে প্রায় ৪ শতাংশ অবমূল্যায়নের সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে আমেরিকার নতুন অর্থনৈতিক নীতির কারণে ডলারের সঙ্গে অন্যান্য বৈশ্বিক মুদ্রার দরের বড় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে, যার প্রভাব তেলের দামেও দেখা গেছে।
ক্রমবর্ধমান ডলার সূচক এটাই প্রমাণ করছে যে মার্কিন ডলার অন্য মুদ্রা যেমন পাউন্ড, ফ্রাঁ, ইউরো, ইয়েন ও রুপিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
অতীতেও দেখা গেছে, যখন ডলারের দাম বেড়ে যায়, তখন এটি যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার এবং তেলের ব্যারেলের মতো সমস্ত সম্পর্কিত পণ্যের মূল্যে প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে কমে যায় ভারতীয় রুপির মতো মুদ্রার মূল্য।
এই সমস্যার মধ্যেই সম্প্রতি বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ভারতের বাজারে ৩ হাজার ৭৯৩ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছে। এ বছর ভারতের বাজার থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপি তুলে নিয়েছে তারা, যা গত ১২ বছরে তাদের মোট বিনিয়োগের সমতুল্য।
তারা মনে করছে, এই মুহূর্তে বাজার টালমাটাল। আগামী দিনে সমস্যা বাড়লে বাজারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে; অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলা হয় ঝুঁকিপূর্ণ বাজার। এমন বাজার থেকে অর্থ তুলে নেওয়াই শ্রেয়। যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার বেড়েছে। ফলে এখন সেখানকার বন্ডে অর্থ রাখা নিরাপদ, মুনাফাও ভালো। ফলে রুপির মানের ক্রমাগত অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ডলার সূচকের এমন গতি স্বভাবতই বিনিয়োগকারীদের উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে না। কারণ, এই সময় ভারতের মতো বাজারের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রকে এ ধরনের বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় বলে মনে করা হয়। সূত্র: ইকোনমিক টাইমস।