গত শনিবার হাজার হাজার সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিতে ঢোকেন। এর কিছুক্ষণ আগেই নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ছেড়ে পালান গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
বিক্ষোভকারীরা টেম্পল ট্রিতে ঢোকার কয়েক ঘণ্টা পর শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে ঘোষণা দেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে’ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বুধবার (১৩ জুলাই) পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার একজন নেতৃস্থানীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া প্রথমে নৌবাহিনীর একটি স্থাপনায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে তাঁকে কাতুনায়েকে বিমানঘাঁটিতে নেওয়া হয়। কাতুনায়েক বিমানঘাঁটি শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমানবন্দর বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে সীমানা লাগোয়া।
শ্রীলঙ্কার নেতৃস্থানীয় ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ‘গোতাবায়া ও তাঁর অনুগত আরও কিছু লোকজন দুটি ছোট উড়োজাহাজে আবার কলম্বো ফিরেছেন।’
তবে গোতাবায়া রাজাপক্ষে কোথায় আছেন সে সম্পর্কে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি। কিন্তু স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার দিবাগত রাতে গোতাবায়ার দুবাই যাওয়ার কথা।
পুলিশ জানিয়েছে, টেম্পল ট্রিতে ঢোকা বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে গোতাবায়া রাজাপক্ষের রেখা যাওয়া ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপি খুঁজে পেয়িছিল। সোমবার সকালে সে অর্থ একটি আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের গোতাবায়ার বাসভবনে খুঁজে পাওয়া সেই রুপি গুনতে দেখা যায়। সে অর্থ টেম্পল ট্রির নিরাপত্তা ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করেছিল বিক্ষোভকারীরা।
গত শনিবার শত শত বিক্ষোভকারী কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনে ঢোকে। বিক্ষোভকারীদের আরেকটি দল প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাড়িতে ঢুকে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ২০ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে এক বিবৃতিতে বলেছেন, শুক্রবার (১৫ জুলাই) পার্লামেন্ট ফের অধিবেশনে বসার পাঁচ দিন পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে, সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চুক্তি হলে মন্ত্রিসভার সদস্যরাও পদত্যাগ করবেন।
শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক সূত্রগুলো রোববার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে আগামী মার্চের আগে প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্র: এএফপি।