বুধবার (১৭ আগস্ট) চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একথা জানায়। চীন ও রাশিয়া ছাড়াও যৌথ এই সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে- ভারত, বেলারুশ, মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তানসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে, চীনা সেনারা স্বাগতিক রাশিয়ার নেতৃত্বে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে দেশটিতে যাবে। যৌথ এই মহড়ায় চীনের অংশগ্রহণ ‘বর্তমান আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত নয়’ বলেও মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে।
রয়টার্স বলছে, আসন্ন এই মহড়ার নাম ‘ভোস্তক’। রাশিয়ার নেতৃত্বে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মস্কো ‘ভোস্তক’ (পূর্ব) মহড়ার এই পরিকল্পনা ঘোষণা করে।
রাশিয়া যদিও বর্তমানে ইউক্রেনে একটি ব্যয়বহুল যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবুও মহড়ার পরিকল্পনা ঘোষণার সময় মস্কো জানায়, কিছু বিদেশি বাহিনী এই মহড়ায় অংশ নেবে। অবশ্য সেসময় রাশিয়ার বাইরে আর কারা এতে অংশ নেবে তা প্রকাশ করা হয়নি।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার সাথে বেইজিংয়ের চলমান দ্বিপাক্ষিক বার্ষিক সহযোগিতা চুক্তির অংশ হিসেবে এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করছে চীন।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, ‘এই মহড়ার উদ্দেশ্য হলো অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সাথে ব্যবহারিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতাকে আরও গভীর করা, অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতার মাত্রা বৃদ্ধি করা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা হুমকির মোকাবিলা করার সক্ষমতা জোরদার করা।’
রয়টার্স বলছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অধীনে বেইজিং ও মস্কো ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়েছে। গত বছরের আগস্ট মাসে চীনের উত্তর-মধ্যাঞ্চলে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা নিয়ে যৌথ সামরিক মহড়া করেছিল রাশিয়া এবং চীন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু চীনের নিংজিয়াতে অনুষ্ঠিত সিবু/কোঅপারেশন-২০২১ নামের সেই মহড়ার প্রশংসা করে বলেছিলেন, উভয় দেশের মধ্যে চলমান কর্মকাণ্ড ও মহড়া আরও উন্নত এবং এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
এরপর গত বছরের অক্টোবরে জাপান সাগরে যৌথ নৌ মহড়া করে রাশিয়া ও চীন। আর এর কয়েকদিন পরই পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে প্রথমবারের মতো যৌথ টহল দেয় রুশ এবং চীনা যুদ্ধজাহাজগুলো।
এর পরের মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানায়, চীনের দু’টি এবং রাশিয়ার সাতটি যুদ্ধবিমান তাদের বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছে। অবশ্য এসব বিমানের নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলছিল বলে সেসময় দাবি করে বেইজিং।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন।
তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল। উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনো সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন।
রাশিয়ার পূর্ব সামরিক জেলায় সাইবেরিয়ার কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং এর সদর দপ্তর খবরভস্কে। এই অঞ্চলটি চীনা সীমান্তের কাছে।