১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণকারী গ্রাহকরা এপ্রিল ও মে মাসের জন্য সুদ পরিশোধ করবেন বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে। তাদের পক্ষে ২ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবে সরকার। ১০ লাখ টাকার বেশি ব্যাংকঋণ নিয়েছেন এমন গ্রাহকদের বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে। তবে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকার সুদ ছাড় পাবেন। ঋণগ্রহীতা ছোট গ্রাহকদের ছাড় দিয়ে দুই মাসের স্থগিত সুদের বিষয়ে এ নীতিমালা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে এ নীতিমালা জারি করা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী, স্থগিত সুদের বিষয়ে কোনো সুবিধা পাবেন না ঋণখেলাপিরা। অর্থাৎ ঋণখেলাপিদের বার্ষিক ১১ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে। একই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংকের অফশোর ইউনিট ও এডি শাখা থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেয়া গ্রাহকরাও স্থগিত সুদের বিষয়ে কোনো বাড়তি সুবিধা পাবেন না। গ্রাহকদের চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে স্থগিত সুদ পরিশোধ করতে হবে।
করোনার আঘাতে বিধ্বস্ত ব্যবসায়ীদের স্বস্তির বার্তা দিতে দেশের সব ব্যাংকঋণের এপ্রিল ও মে মাসের সুদ স্থগিত করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্থগিত করা সুদ স্থানান্তর করতে বলা হয় ‘সুদবিহীন ব্লকড হিসাবে’। মে মাসের শুরুতে জারীকৃত ওই প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, ব্লকড হিসাবে স্থানান্তরকৃত সুদ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা যাবে না। একই সঙ্গে এ সুদকে ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর না করার নির্দেশও দেয়া হয়েছিল। ব্যাংকঋণের দুই মাসের সুদের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। ওই নির্দেশনার পর দুই মাসের সুদ নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন ব্যাংকাররা। এ অবস্থায় স্থগিত সুদের ভর্তুকি হিসেবে রাজকোষ থেকে ২ হাজার কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। বাকি টাকা গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হবে বলে নির্দেশনা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে সব ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। হিসাবে ১ লাখ টাকার বার্ষিক সুদ হয় ৯ হাজার টাকা। এখন সরকার যদি ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন এমন গ্রাহকদের দুই মাসের সুদ পরিশোধ করে, তাহলে গ্রাহকপ্রতি সর্বোচ্চ ভর্তুকি হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন এমন গ্রাহকরা ৭ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করলে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি পান।
প্রসঙ্গত, দুই মাসের স্থগিত সুদের বিষয়ে গত ৩০ মে বণিক বার্তায় ‘৮% হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে গ্রাহকদের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।