ভারতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫৪ জন। অপরদিকে গতদিন পর্যন্ত তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যাটা এখন ২ লাখ ৯১ হাজার ৫৮৮। শীর্ষ আক্রান্ত তিন দেশ যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়ার পরপরই এখন ভারতের অবস্থান।
করোনা সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি মানুষের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌনে আট লাখেরও বেশি। আর রাশিয়ায় আক্রান্ত ইতোমধ্যে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
এনডিটিভির অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ভারতে গত ২৪ মে থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অর্থাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে। ওইদিন শীর্ষ আক্রান্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান ছিল দশম স্থানে। এরপর ১৮ দিনের মাথায় সেই অবস্থান এখন চতুর্থ।
দ্রুত সংক্রমণ শুরুর পথে দেশটি টপকে যায় চীনকে; গত ডিসেম্বরের শেষদিকে এই চীনের উহান থেকেই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল। এছাড়া চীনের পর ভাইরাসটি সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল ইতালি ও স্পেনকেও ছাড়িয়ে যায় ভারত। পেছনে পড়ে যায় জার্মানি, ফ্রান্স, তুরস্ক ও ইরানও।
প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ২৫ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করে মোদি সরকার; তখন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। এরপর লকডাউন জারি ছিল যেকোনো দেশের চেয়ে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে। তবুও ভাইরাসটির সংক্রমণ রুখতে পারেনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল এই দেশটি।
বিশেষ করে গত কয়েক সপ্তাহ তো ছিল ভয়াবহ। প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার মানুষ শনাক্ত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৯ হাজার ৯৯৭ জন শনাক্ত হয়েছে। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর যা ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। দেশটিতে গতদিনে ৩৫৭ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৮ হাজার ১০২ জন।
ভারতে করোনা সংক্রমণের বড় হটস্পট মাহরাষ্ট্র। রাজ্যটিতে প্রায় এক লাখ অর্থাৎ ৯৭ হাজার ৬৪৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। মহরাষ্ট্রের পর যথাক্রমে রয়েছে তামিলনাডু ও দিল্লি। ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৬৮৭। তামিলনাডুতে প্রায় ৩৭ হাজার।
প্রকোপ ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করলেও গত এপ্রিল থেকেই লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও লকডাউন পঞ্চম দফায় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জারি রয়েছে কিন্তু এই লকডাউন চলছে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে।
বাস, ট্রেন এবং অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল করছে। বেশিরভাগ অফিস খুলেছে। খুলে দেওয়া হয়েছে মার্কেট, মল এবং উপাসনালয়গুলো। ক্ষেত্রবিশেষে অবশ্য লকডাউন বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবুও ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে পারছে না ভারত।
ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব শুর হয় জানুয়ারিতে; কেরালা রাজ্যে এক শিক্ষার্থীর দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি প্রথমবার শনাক্ত হওয়ার মাধ্যমে। ওই তরুণ ছিল নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবস্থলে অবস্থিত চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে কেরালা বিস্ময় জাগিয়ে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।