সংস্থাটির প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, বিশ্বে নেতৃত্ব ও ঐক্যের অভাব মহামারীর চেয়েও বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।
সোমবার দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটের আয়োজনে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ভার্চুয়াল ফোরামে তিনি একথা বলেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, “এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের এখন একান্ত প্রয়োজন ঐক্য ও সংহতি। এই মহামারীর রাজনীতিকরণ সঙ্কট আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
“এই ভাইরাস নয়, এই মুহূর্তে যে বড় হুমকি আমরা মোকাবেলা করছি, তা হচ্ছে বৈশ্বিক সংহতি ও নেতৃত্বের অভাব।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তার বক্তব্যের কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিলেও করোনাভাইরাস মহামারীকালে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে চীনের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে সংস্থাটিতে তহবিল জোগানো স্থগিত করেছে।
বাণিজ্য নিয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন কয়েক বছর ধরে চলছিল; সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে করোনাভাইরাস মহামারী।
গত বছরের শেষে চীনের উহানে নতুন এই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দেশটি বিশ্বকে তথ্য না দিয়ে তা গোপন করতে চেয়েছিল বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ।
চীন থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর মহামারীতে বিপর্যস্ত এখন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বে আক্রান্ত ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ২৩ লাখই যুক্তরাষ্ট্রের।
সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে ভারতে পোড়ানো হচ্ছে চীনের পতাকা। ছবি: রয়টার্সসীমান্তে সংঘর্ষের জেরে ভারতে পোড়ানো হচ্ছে চীনের পতাকা। ছবি: রয়টার্স
আবার এই মহামারীকালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দুই দেশ চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত সংঘাতের পর উত্তেজনা চলছে।
শনাক্ত রোগীর বিচারে ভারত এখন বিশ্বে চতুর্থ। সোয়া ৪ লাখের বেশি রোগী ধরা পড়েছে দেশটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রে মতো কড়া ভাষায় না হলেও এই মহামারী মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘নড়বড়ে বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা
দুবাইয়ের ফোরামে আলোচনায় গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, কিছু অঞ্চলে মহামারী মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজটি আরও জোরদার করা দরকার।
কিন্তু কোন কোন অঞ্চলে তাও স্পষ্ট করেননি তিনি।
ক’দিন আগেই ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছিল, করোনাভাইরাস এখন আরও দ্রুত ছড়াচ্ছে।
এরপর একদিন আগেই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের কথা জানায় সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। ছবি: রয়টার্সবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। ছবি: রয়টার্স
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, এখন সব দেশেরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবার উপর।
তিনি বলেন, একটি কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়ে বিশ্ব এটা শিখেছে যে শক্তিশালী একটি স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোই বিশ্ববাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত তৈরি করতে পারে। শুধু তাই নয়, তার মাধ্যমেই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত হতে পারে।